খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে সাজা ঘোষণা আদালতের

0 0
Read Time:5 Minute, 46 Second

নিজস্ব প্রতিনিধি- খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ১৯ জনের মধ্যে ৬ জনকে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাবাস ও বাকিদের মধ্যে ১০ জনকে ৮ বছর ও ৩ জনকে ৬ বছরের জেলের সাজা শোনালেন বিচারক। দোষী সাব্যস্ত ২ মহিলা আলিমা ও গুলশানরা বিবির ৬ বছরের কারাবাস ঘোষণা করেছেন বিচারক। অন্যদিকে দোষী সাব্যস্ত সহিদুল ইসলামকেও ৬ বছর জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। দোষী শেখ রামতুল্লা, সাইদুল ইসলাম, মহম্মদ রুমেল, আমজাদ আলি শেখ, জাহিদুর ইসলাম ১০ বছরের জেল ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা। দোষী গিয়াসুদ্দিন মুনসি, সাহাদুল আলম, আবদুল হাকিম, আবদুল কালাম ও রেজাউল করিমের ৮ বছর কারাবাস এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ১ বছর জেল।সাজা ঘোষণা করে বিচারক জানিয়েছেন, ৫ বছর সাজা খেটে নিয়েছে যারা, তাদের বাকিটা খাটলেই হবে। সেক্ষেত্রে আলিমা ও গুলশানরা বিবির আর একবছর জেল খাটলেই হবে। বিস্ফোরণকাণ্ডে অত্যতম প্রধান অভিযুক্ত ছিল এই ২ মহিলা। বিস্ফোরকের আঘাতে ছিন্নভিন্ন প্রিয়জনের দেহ সামনে পড়ে থাকা অবস্থাতেও এই ২ মহিলা জঙ্গি কার্যকলাপের প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। পাশাপাশি, সাজা শেষের পর শেখ রামাতুল্লা, জাহিদুর ইসলাম সহ ৪ জন বাংলাদেশিদের সেদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।প্রসঙ্গত, এদিন আদালতের কাছে সর্বনিম্ন সাজার আবেদন জানায় অভিযুক্তরা। পরিবারের কথা উল্লেখ করে আদালতের কাছে সর্বনিম্ন সাজার আবেদন জানানো হয়। এদিনও কোলে সন্তানকে নিয়ে আদালতে ঢুকতে দেখা যায় আলিমা ও গুলশানরা বিবিকে। তবে সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে সর্বোচ্চ সাজার পক্ষে সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত মুলতুবি করে দেন বিচারক। বিকেল ৪টেয় সাজা ঘোষণার কথা জানান। শেষমেশ বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ সাজা ঘোষণা করেন বিচারক।প্রায় পাঁচ বছর পর আজ বর্ধমান খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের সাজা ঘোষণা করতে চলেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। এই ঘটনায় মোট ৩১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১৯ জন পিটিশন দাখিল করে নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে। তারা জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগ রয়েছে। ২৩ অগাস্ট আবেদনের শুনানি হয়, গুলশন আরা বিবি, আলিমা বিবি-সহ ১৯জনকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। প্রত্যেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাঁরা কারও প্ররোচনায় দোষ স্বীকার করছেন কিনা। অভিযুক্তরা জানান, তাঁরা কারও প্ররোচনা ছাড়াই দোষ স্বীকার করছেন। এরপরই ১৯জনকে দোষী সাব্যস্ত করে এনআইএ-র বিশেষ আদালত।২০১৪-র ২ অক্টোবর, অষ্টমীর দিন দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বর্ধমানের খাগড়াগড়। প্রকাশ্যে আসে এরাজ্যে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-জঙ্গি নেটওয়ার্কের  জাল। জেলা পুলিস সিআইডি হয়ে এনআইএ-র হাতে তদন্তভার হাতে যায়। গ্রেফতার করা হয় ৩১ জনকে। চার্জ গঠন ও ট্রায়াল শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকেই। মোট ৮০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আদালত সূত্রে খবর,  এই ঘটনার ব্যাপ্তি বা পরিধি এতটাই বেশি যে এখনও বিভিন্ন সময়ে এই ঘটনায় অভিযুক্তরা গ্রেফতারের পর নতুন করে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া ও তা নিয়ে ফের আদালতে শুনানি হতে হতেই পাঁচ বছরের পথ অতিক্রম করে যায়। তদন্ত চলাকালীন একটি চার্জশিট ও ৪টি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট সহ মোট ৫টি চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ।চার্জশিটের পর ৩১ জনের বিচার শুরু হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ১৬, ১৭ ও ১৮ ধারায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ও ভারতী দণ্ডবিধির ১২০বি, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৪১৯ ধারায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, অশান্তি তৈরির চেষ্টা-সহ বিস্ফোরক আইন, অস্ত্র আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। এছাড়াও পাসপোর্ট অ্যাক্ট ও ফরেনার অ্যাক্টেও মামলা দেওয়া হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!