কোলাঘাটে গণধর্ষিতা কিশোরীর মৃত্যু
কোলাঘাট:- মৃত্যু বাগডিহা গ্রামের গণধর্ষিতা কিশোরীর। গতকাল গভীর রাতে তার মৃত্যু হয় কলকাতার পিজি হাসপাতালে। কিশোরীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবী চাইছেন পরিবার ও গ্রামবাসীরা।
গত শনিবার (24 শে আগস্ট ) রাতে কিশোর কিশোরী সাইকেল নিয়ে টিউশন পড়তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। বাড়ি ফেরার পথে তাদের পথ আগলায় এলাকারই কিছু যুবক। পরে প্রেমিক কিশোরকে মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় অভিযুক্তরা। তারপরই কিশোরীকে একটি ঝোপের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। এবং সেই মুহূর্তের ছবি মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। মুখ খুললেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকিও দেয়। লজ্জায় কিশোরী বাড়ি এসে ওই রাতেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে। পরিবারের লোকেরা তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। গত মঙ্গলবার যন্ত্রণায় ও কষ্ট কিশোরী পরিবারের লোককে সব ঘটনা খুলে বলে। সেই মর্মে পরিবারের লোকেরা কোলাঘাট থানা গণধর্ষণের অভিযোগ জানান। বুধবার দিন কিশোরীকে সংকটজনক অবস্থায় কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপরে কোলাঘাট থানায় ধর্ষণের অভিযোগ হয় পরিবারের তরফে। গত ২৭ তারিখ গভীর রাতে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ বিশ্বজিৎ পাত্র,সমির মন্ডল,সৌরভ দোলই(১৬),ও বিশ্বজিৎ পাত্র কে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্ত আরো একজনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে কোলাঘাট থানার পুলিশ।
কিশোরীর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ ও শোকস্তব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃতদেহ কোলকাতা থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয়। সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ কোলকাতার এস এসকে এম থেকে দেহ আসে। তরুনীর বাড়ির দু কিমি আগেই দেহ আটকে দেয় এলাকার সাধারন মানুষ। এরপর ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দেহ রেখে। প্রায় এক ঘন্টা কুড়ি মিনিট পথ অবরোধ হয়ে থাকে দেউলিয়া বাজারে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই সময় প্রথমে এলাকার সিপিআই এম বিধায়ক সেক ইব্রাহিম আলি সহ ডি ওয়াই এফ আই এর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কিছুপরে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব মৃতদেহে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এদিন শ্রদ্ধাজানাতে আসেন বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ এছাড়াও ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি নবারুন নায়েক। প্রায় এক ঘন্টা কুড়ি মিনিট অবরোধ চলার পর বিক্ষোভকারীদের দোষীব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিলে কোলাঘাট থানার পুলিশকে তবেই অবরোধ ওঠে। এরপর হাজার খানেক গ্রামবাসী তারা মৃতদেহ নিয়ে তরুনীর বাড়ি যোগীবেড় পর্যন্ত মোমবাতি মিছিল করে শ্রদ্ধাঘ্র্য জানান। রাস্তার ধারে অগনিত মানুষ শেষশ্রদ্ধা জানায় তরুনীকে।