শালতোড়ার ইশ্বরদা কাঠের সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে স্থানীয়রা
নিজস্ব প্রতিনিধি- যাতায়াতের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছিল কাঠের অস্থায়ী সেতু। দিব্যি সেই সেতু দিয়ে চলছিল নদী পারাপার। কিন্তু দামোদরের জলের তোড়ে ভেঙে পড়লো শালতোড়ার ইশ্বরদা কাঠের নড়বড়ে সেতু। সেতু ভেঙ্গে পড়ায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈজ্ঞানিক ভাবে আদ্দিকালের ভাঙাচোরা নৌকায় পারাপার করছে ষাট থেকে সত্তরটি গ্রামের প্রায় আট থেকে দশ হাজার মানুষ।
দামোদরের এক প্রান্তে বাঁকুড়া, অন্যপ্রান্তে শিল্পনগরী আসানসোল। উত্তর বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকের বেশিরভাগ মানুষেরই রুজি-রোজগারের একমাত্র ভরসা আসানসোল।শালতোড়া এলাকার বামুনতোড়, রাউতোড়া, বিহারীনাথ, চুয়াবেড়িয়া, মুটুকবনি সহ ৬০ থেকে ৭০ গ্রামের উৎপাদিত শাক, সবজি, দুধ, মাছ ও ফুল বেশিরভাগটায় নদীপথে রপ্তানি হয় আসানসোলে। আর খুব কম সময়ে আসানসোল যাবার একমাত্র ভরসা ইশ্বরদা গ্রামের অস্থায়ী কাঠের সেতু। না হলে যে দুটি রাস্তা রয়েছে একটি রানীগঞ্জ সেতু হয়ে সেটা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার রাস্তা এবং আরেকটি ডিসেরগড় সেতু হয়ে, সেটাও প্রায় ৫০ কিলোমিটার কাছাকাছি পথ। তাই জীবন বাজী রেখে এই সেতু দিয়েই ষাট থেকে সত্তরটি গ্রামের প্রায় আট থেকে দশ হাজার মানুষ নিত্য যাতায়াত করেন। কয়েকশো শ্রমিক প্রতিদিন নদী পেরিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করেন আসানসোলের বানপুর শিল্পাঞ্চলেও। এই এলাকার উৎপাদিত ফল ফুল সবজি ও দুধের মূল বাজার আসানসোল। স্বভাবতই পেটের টানে এই বাঁকুড়ার এই এলাকার মানুষকে এড়ায় দৈনিক যাতায়াত করতে হয় ওই প্রান্তে শিল্পনগরীতে। বছরের নয় মাস কাঠের নড়বড়ে সেতু দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষার এই তিন মাসে তাদের সমস্যা যন্ত্রণায় পরিনত হয়। তখন ঐ পারে যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন হলো নৌকা। তাও আবার নৌকা সংখ্যা মাত্র তিনটি। তাই একটি নৌকা মিস করলে আরও এক ঘণ্টা বসে থাকতে হবে। সমস্যায় পড়বেন এইভাবে কিছুটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আদিকালের ভাঙ্গাচোরা তিনটি নৌকাতে গাদাগাদি করে পিঠেপিঠে ঠেস দিয়েই চলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার। মানুষের পাশাপাশি নৌকায় চাপানো হয় সাইকেল,বাইক, বস্তাবন্দী সবজি দুধ সবকিছুই। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে অপ্রশিক্ষিত মাঝিরা চালিয়ে যাচ্ছে নৌকা। ফলে জীবন কে তুচ্ছ করে এই তিন মাস চলে নৌকায়় নিত্য যাত্রায়াত।স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন অবশ্য ডিভিসির মনগড়া জল ছাড়া ও মানুষের সচেতনতার অভাবকে দোহাই দিয়ে নিজেদের দায় সারেছেন।