করোনার রেশ হোলির বাজারেও, মন্দা ব্যবসায় মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের
অপর্ণা দাস : প্রতিবারই হোলির প্রায় দিন দশেক আগে থেকেই আট থেকে আশি সকলেই নানা পরিকল্পনা করেন। কী কী রঙ কিনবেন, কোন বাদর রঙ বন্ধুদের মাখিয়ে ওর ভূত বানিয়ে দেবেন, এইরকম নানা মজার প্ল্যান আগে ভাগেই করা থাকে। কারন বছরের এই একটা দিন সমস্ত গ্লানি, অন্ধকার দূরে সরিয়ে রেখে সকলেই হোলির রঙে মনকে রাঙিয়ে তুলি। কিন্তু এবছর ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ সকলেরই মুখ ভার। কারন অবশ্য একটাই। করোনা।
নানা রকমের রং আর পিচকারি থেকে শুরু করে আবির, বেলুন সব সাজিয়ে ফি বছর দোল বা হোলির ১০-১২ দিন আগে থেকেই ফুটপাথের ধারে অস্থায়ী দোকান দেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, এ বছর বদলে গিয়েছে সেই চেনা ছবিটা। সারি সারি দোকান, রং-বেরঙের পসরা সবই আছে, কিন্তু ক্রেতা নেই। কারন করোনা মানুষকে এমনভাবে ভয় দেখিয়েছে যে, এবার রঙ কিনতে মানুষ যেন ভুলেই গেছে। এমনকী দু’একজন ক্ষুদে যদিও বা রঙ কেনার বায়না ধরে, তবে মা বাবা হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন শুধু মাত্র আবির। জুটছে না পিচকারি। কারন তাদের মতে অধিকাংশ পিচকারির মধ্যেও লেখা মেড ইন চায়না। অবশ্য বড়োড়াও এবার আবিরের গন্ডির বাইরে যেতে চাইছে না। অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো অবস্থা।
এদিকে তাদের এই রঙ বিমুখ হওয়ার জেরে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। দোকানদারেরা এ ওর দিকে তাকিয়ে বেজার মুখে বসে রয়েছেন। ক্রেতার অভাবে নিজেরা বলাবলি করছেন যে, মোবাইলে সব খবর আসছে, রং মাখলে রোগ হবে। তাই এ বার লোকজন রং কিনতেও চাইছেন না।” বোঝা গেল, ভারতে দু’ডজনেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহর কলকাতাতেও। কী আর করা যাবে? তবুও লাভের মুখ দেখতে দোকান খুলে বসে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বড়বাজারে পাইকারি রঙ ব্যবসায়ীরা অবশ্য স্বীকার করছেন যে, দোল খেলার সরঞ্জামের বেশিটাই ইদানীং চিন থেকে আসায় আতঙ্ক বেড়েছে। আবির প্রস্তুতকারক সংস্থার মালিক এ বিষয়ে বলেন, ‘‘রং বা আবিরের সঙ্গে আদৌ করোনাভাইরাসের কোনও যোগ আছে কি না জানি না। তবে, মানুষ কিছু না জেনেই আতঙ্কিত হয়েছেন। আমাদের এ বারের বিক্রি দেখেই তা বুঝতে পারছি।”