জৌলুশহীন ৬২৪ বছরের মাহেশের রথ ,সাংসদের কোলে চেপেই নারায়ণ শিলা পৌছালো মাসির বাড়ি
সুমন করাতি [হুগলী] ৬২৪ বছরের মাহেশের জগন্নাথ দেবের রথের চাকা এবারে রাজপথে গড়ালো না। করোনার আবহে সবকিছু থমকে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে দেবালয়ের দরজাও । তাই প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকে ঐতিহাসিক মাহেশের জগন্নাথদেবের রথযাত্রা একপ্রকার মন্দিরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হলো । ভোরবেলা মঙ্গলারতির পর জগন্নাথ ,বলরাম ,সুভদ্রাকে মন্দিরের চাতালে এনে রাখা হয়। চলতে থাকে সীমিত সংখ্যক ভক্তদের নিয়ে পূজা অর্চনা । সামাজিক দূরত্ব মেনে সবকিছু করা হয়েছে যখন মন্দিরের মধ্যে এই পূজা-অর্চনা হচ্ছিল তখন মন্দিরের বাইরে দর্শনার্থী তারা জয় জগন্নাথ ধ্বনিতে মুখরিত করেছে আকাশ বাতাস তাদের মনের একটাই দুঃখ যে ভগবানকে তারা সামনাসামনি দর্শন করতে পারলেন না ।
জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা এই তিনজন তিনজনই জগন্নাথ দেবের মন্দিরের একটি কক্ষে মাসির বাড়ি করে সেখানেই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এবং আগামী আট দিন সেখানেই চলবে তাদের পূজা-অর্চনা । অন্যদিকে মন্দিরের নারায়ণ শিলাকে সিংহাসনে করে নিয়ে যাওয়া হয় মাসির বাড়ি । জগন্নাথ বাড়ি থেকে সেই নারায়ণ শিলা গ্রহণ করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । জয় জগন্নাথ ধোনির মধ্য দিয়ে ভক্তরা নারায়ণ শিলাকে নিয়ে যান মন্দির থেকে। নারায়ণ শিলাকে নিয়ে রথের চার দিকে প্রদক্ষিণ করা হয় । এর পর তিন কিলোমিটার দূরবর্তী মাসির বাড়ির দিকে পদব্রজে সালগ্রাম শিলাকে নিয়ে কল্যানবাবু সঙ্গে সীমিত সংখক ভক্তবৃন্দ কে নিয়ে রওনা দেন মাসির বাড়ির উদ্দেশে । এই সময় জি টি রোডের দুধারে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে অগণিত ভক্তবৃন্দ ভগবান কে দর্শন করেন ।
উলু ধ্বনি , শঙ্খ ধ্বনি , কাসরঘন্টা , খোল , করতালে ধোনিত হয় প্রভু জগন্নাথ দেবের নাম । দুধারের বাড়ি গুলির ছাদ থেকে দর্শনার্থী ভগবানকে দর্শন করেন । তারপরই নারায়ণ শিলাকে দিয়ে স্থাপন করা হয় মাসির বাড়িতে। সেখানেই আট দিন পূজিত হবেন এই নারায়ন বিগ্রহ। আটদিন সেখানে পূজিত হবার পর তাঁকে নয় দিনের মাথায় উল্টো রথের দিন আবার মূল মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে। এই ভাবেই সাঙ্গ হল এবারের মতো ঐতিহাসিক মাহেশের রথযাত্রা আবহ মানকাল ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে যে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় তা এবারে একবারেই ম্রিয়মাণ মারণ ব্যাধি প্রকোপে।ভক্তরা চোখের জলে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছেন আগামী বছর যাতে সারা পৃথিবী থেকে চলে যায় ভয়াল এই রোগ। আগামী বছর আবার প্রভু স্বমহিমায় রথে চড়ে এই রথ যাত্রায় অংশ নেবেন এবং ভক্তদের আশীর্বাদ বর্ষণ করবেন।