তোমার দুর্গা প্যান্ডেলে চক্ষুদানে শুরু, আমার দুর্গা চালচিত্রে হাতে রঙ আর তুলি

0 0
Read Time:3 Minute, 15 Second

প্রীতম ভট্টাচার্য্য: কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির রাজরাজেশ্বরীর দুর্গার চালচিত্রের মধ্যে রাম, সীতা, শিব, বিষ্ণু, অঙ্কিত থাকে। চালচিত্র হলো সাবেকি দুর্গা প্রতিমার উপরিভাগে অঙ্কিত দেবদেবীর কাহিনীমূলক পটচিত্র।কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি তরুণ সংঘের, কুমোড়পাড়া ঘাট লেনের বাসীন্দা রেবা পাল এই চালচিত্র আঁকেন সারাবছর ধরে। একদিকে অভাব অন্যদিকে করোনার প্রকোপে জীবন ও জীবিকা অনেকেই বদল করছেন। শিল্পী হয়ে বেঁচে থাকটা এই সময়ে কঠিন হয়ে পড়ছে অনেকের কাছে। ভাঙাঘরে ৭৪ বছরের রেবা পালের একমাত্র ভরসা বিধবাভাতা কিংবা কোনো সেচ্ছাসেবী সংস্থার দেওয়া ত্রান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্বামীর ঘর করতে চলে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়িতে।সেই পথ চলা শুরু। স্বামী প্রয়াত হয়েছেন চোদ্দ বছর আগে। স্বামী ষষ্ঠীপাল কলকাতায় বিভিন্ন ঠাকুরের কাজ করতেন আর অবসর সময়ে এই দুর্গাপট আঁকতেন। তখন দুর্গাপটের চাহিদা ছিলো ভালোই সিজিনে কলকাতার পাইকার দের যোগান দিতে স্বামী স্ত্রী দুজনাই এই কাজে হাত লাগাতেন। সেই থেকে রেবা পাল এই কাজ করে আসছেন। এই আয় থেকেই তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।ছেলেও এই কাজ করে ও কলকাতায় ঠাকুর গড়ার কাজ করেন। অভাব দৈনিন্দিন, প্রিন্টেড চালচিত্র বাজার নষ্ট করে দিয়েছে, এখন আর সেরকম চাহিদা থাকেনা হাতে আঁকা চালচিত্রের, আবার করোনার প্রকোপে এবছর বাজারে পাইকার পাওয়া দুষ্কর, সরকারী সাহায্য সেভাবে মেলেনা। তবু শিল্পীমন কোনোভাবেই বাঁধ মানেনা, কাজ করেন নিজের তাগিদে, যদি কেউ কেনে চালচিত্র, তবে কিছুতো উপার্যন হবে, বাঁচবে সংসার।

তিনি বলেন ঘরের কাজ করে, তারপর এই কাজ করি, আঁকতে ভালোই লাগে, না আঁকলে সময় কাটেনা, একটা কল্পনার জগতে ডুবে থাকি। সারাবছর দুগ্গা মা আমার ঘরে বিরাজ করেন। তিনি বলেন এতে কোনো সিন্থেটিক রঙ ব্যাবহার হয় না, প্রাকৃতিক রঙ ব্যাবহার করে এই চালচিত্র অঙ্কন করা হয়।তেঁতুলবিচির আঠা, খড়িমাটি, খবরের কাগজের ওপর প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে শিব দুর্গার পরিবার, নন্দী ভৃঙ্গী,সখা সখী, রাধাকৃষ্ণ,অঙ্কন করা। বিভিন্ন গল্পে সাজানো হয় এই পট।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!