ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে যুবকের রহস্য মৃত্যু

0 0
Read Time:5 Minute, 26 Second

মালদা: ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে রহস্য মৃত্যু হয় পরিযায়ী শ্রমিকের । সুবিচারের জন্য প্রশাসনকে জানায় তারা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। পরিবারের লোক অভিযোগ করে যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো সেই ঠিকাদারই খুন করেছে তাকে।
এদিকে রোজগেরে ছেলের মৃত্যুর পর প্রচণ্ড দুর্দশার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে পরিবারের। মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য বা স্থানীয় কোন জনপ্রতিনিধিও পাশে এসে দাঁড়ায়নি। একে ছেলে হারানোর শোক তারপর আবার দারিদ্রতা। সরকারি সাহায্যের আশায় বসে আছে অসহায় বাবা মা।

মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মালিওর গ্রাম পঞ্চায়েতের শামুখা গ্রামের যুবক বংশীলাল মন্ডল। হরিয়ানার কাটলা এলাকায় একটি কাঠ চেরাই মিলে কাজ করত সে। কাজের বেতন নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল তার।ঠিকঠাক পারিশ্রমিক না মেলায় বাড়ি চলে আসতে চেয়েছিল সে। কিন্তু বাড়ি ফেরা হয়নি বংশীলালের। গত ৮ ই অক্টোবর সেখানকারই রেললাইনে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর খবর বাড়িতে আসে। পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে খুন করা হয়েছে তাদের ছেলেকে।কারণ যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতো বংশীলাল, সে কিছুদিন ধরে খুনের হুমকি দিয়েছিল তাকে। পরিবারের লোক প্রশাসনের কাছে সুবিচারের দাবি জানায়। কিন্তু তারপর কেটে গেলো এক সপ্তাহ। সুবিচার দূরের কথা প্রশাসনিক কোন হস্তক্ষেপে এখনো হয়নি বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকেরা। এদিকে এইভাবে রোজগেরে ছেলের হঠাৎ মৃত্যুর পর প্রচণ্ড দুর্দশার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে এই পরিবারের। কিন্তু পাশে এসে দাঁড়ায়নি কোন জনপ্রতিনিধিও। মেলেনি কোনরকম সরকারি সাহায্য বা সাহায্যের আশ্বাস। এই মুহূর্তে সরকার তাদের পাশে না দাঁড়ালে তাদের পক্ষে দিনযাপন করা খুব সমস্যা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকেরা। স্থানীয় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অজিত কুমার সাহা এই পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে যান। তিনিও প্রশাসনিক উদাসীনতার কথা বলেন। যদিও তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান জানিয়েছেন তিনি এই পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন।

তৃণমূল নেতা তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান বলেন,”আমি আমার কাজ নিয়ে কয়দিন একটু ব্যস্ত ছিলাম। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে খবরটা জানতে পারলাম। যেভাবে আমি মানুষের পাশে দাঁড়ায় এই পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো। সব রকম ভাবে ওদের সাহায্য করবো। “

বংশী লালের দিদি মঞ্জু মণ্ডল বলেন,”কাজ করতে গিয়ে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হলো। প্রচন্ড অসহায় অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে আমাদের। কিন্তু কেউ পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না। আমরা চাইছি আমার ভাই সুবিচার পাক এবং সরকার যাতে আমাদের পাশে দাঁড়াই। নাতো দিন গুজরান করা খুব কষ্টকর হয়ে যাবে বাবা-মায়ের কাছে।”

ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অজিত কুমার সাহা বলেন,”আমাদের তো এই মুহূর্তে তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। তবে চেষ্টা করবো এদের পাশে থাকার। সাথেই প্রশাসনিক উদাসীনতা নিয়ে সওয়াল করেন তিনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরদেরও তোপ দাগেন।”
পুত্রশোকে বিহ্বল বংশিলালের বাবা মহাবীর মন্ডল বলেন,”আমার ছেলে যেতে চেয়েছিল না জোর করে কাজে নিয়ে গিয়েছিল স্থানীয় যুবক ছোট্টু মন্ডল। যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত তারাই খুন করেছে ছেলেকে। আমরা সুবিচার চাই। প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। আমাদের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। ছেলের মৃত্যুর পর সংসার কিভাবে চলবে এই নিয়ে ভেবে কুল পাচ্ছিনা।”

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!