নদী ভাঙ্গনের কারণে বার বার পরিবর্তন পুজোর স্থানের
নিউজ ডেস্ক: নদী ভাঙনের কবলে পরে বার বার পুজার স্থান পরিবর্ত হয়েছে মানিকচকের দিয়ারা সর্বজনীন দুর্গা পুজার । কখনো আম বাগানে কখনো বা স্কুল চত্বরের অস্থায়ী ভাবে আর কখনো চাষের জমিতে হয়ে আসছে মায়ের পুজো। মথুরাপুরের নীলকুঠির জমিদার বাহাদুর সিংহ সিংয়ের প্রতিষ্ঠিত এই পুজো বারবার গঙ্গার গ্রাস ঐতিহ্য হারিয়েছে।
প্রায় ১৯০৫ সালে এই পূজার প্রতিষ্ঠা বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। প্রায় ১১৫ বছর আগের কথা। মানিকচকের দাল্লুটোলায় মায়ের বেদি করে পুজো সূচনা হয়েছিল। পূজার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মথুরাপুরের জমিদার বাহাদুর সিংহীর পরিবার। প্রায় ৯০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেখানে পুজো হয়েছিলো। একসময় বাহাদুর সিংহ সিংয়ের পরিবার এই পুজোর থেকে সরে দাঁড়ায়। তখন থেকে গ্রামবাসীরাই পুজোর আয়োজন করে আসছে। নয়ের দশকের শুরু থেকে গঙ্গার ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহতা শুরু হয়। ১৯৯৫ থেকে ব্যাপক ভাঙ্গন হয়। এই ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় দাল্লুটোলার মা দশোভূজার মন্দির। ১৯৯৫ ফের গ্রামবাসীরা বেচুটোলায়়় মায়ের মন্দির স্থাপন করে পুজো শুরু করে। চার বছর পর আবার গঙ্গার ছোবল। নতুন করেে গ্রামবাসীরা মায়ের মন্দির স্থাপন করেন ডোমহাটে। পাঁচ বছর পর সিটিও ভাঙনে তলিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত সর্বশেষ মায়ের ঠিকানা জোতপাট্টা আমবাগানের স্থায়ী মন্দির।
গত তিন দশক ধরে মানিকচকে গ্রামের পর গ্রাম গঙ্গার ছোবলে তলিয়ে গিয়েছে। মানুষের ভিটেবাড়ি, কৃষিজমি গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। গঙ্গার রক্তচক্ষু থেকে বাদ যায়নি মা দশভূজার বেদীও। বারবার গঙ্গা গ্রাস করে নিয়েছে জগজ্জননী মায়ের মন্দির। ক্রমাগত ভাঙনে মায়ের ঠিকানা বারবার বদলেছে । তাই লোকে এই পুজোকে ভ্রাম্যমাণ দুর্গাপুজো বলেই জানত। গত বছর থেকেই মা সপরিবারে থিতু হয়েছেন জোতপাট্টার আম বাগানে একটি স্থায়ী মন্দিরে। যদিও পুজো কমিটির নাম খাতায়-কলমে মানিকচক দিয়ারা সর্বজনীন দুর্গাপুজো। স্থান বদল এর সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাচ্ছে মায়ের মন্দিরের নামকরণ এবং ঠিকানা। এখন অনেকে এই পুজো কে বলছেন জোতপাট্টা সর্বজনীন দুর্গাপুজো। মন্দিরের আশেপাশে এখনো বৃষ্টি -বন্যার জল। করোনা আবহে এবার অনাড়ম্বরভাবেই পুজো হচ্ছে।
বর্তমানে পুজো কমিটির এবার সভাপতি নূপেন মন্ডল, সম্পাদক মনোজ মণ্ডল। পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা উজ্জল কর্মকার জানান,এবারের পুজো বাজেট খুবই কম। কোভিড পরিস্থিতির জন্য চাঁদা আমরা তুলছি না। যেমন করে হোক পুজো করতে হবে। এক চালায় পূজিতা হবেন মা। প্রতিবার মেলা বসে। কিন্তু এবার কোভিডের কারণে আমরা নিজেরা কোন মেলা বসাচ্ছি না। তিনি পুজার ইতিহাস সম্পর্কে আরো জানান প্রায় ১১৫ বছর পুরাতন আমাদের পুজা।
১৯৯৫ থেকে ব্যাপক ভাঙ্গন হয়। এই ভাঙ্গনে তলিয়ে যায় দাল্লুটোলার মা দশোভূজার মন্দির। ১৯৯৫ ফের গ্রামবাসীরা বেচুটোলায়়় মায়ের মন্দির স্থাপন করে পুজো শুরু করে। চার বছর পর আবার গঙ্গার ছোবল। নতুন করেে গ্রামবাসীরা মায়ের মন্দির স্থাপন করেন ডোমহাটে। পাঁচ বছর পর সিটিও ভাঙনে তলিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত সর্বশেষ মায়ের ঠিকানা জোতপাট্টা আমবাগানের স্থায়ী মন্দির।
তবে এই স্থায়িত্ব কতদিন থাকবে জানি না। তবে আমরা সব সময় মাকে ডাকছি। দিনের পর দিন গঙ্গানদী আবার এগিয়ে আসছে। জানি ভবিষ্যতে এই গ্রাম বা মায়ের মন্দির থাকবে কি না।