একাধিক বিষয়ে হলদিয়া থেকে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রীর

0 0
Read Time:8 Minute, 15 Second

নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হলদিয়া থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে উঠে প্রথমেই গঙ্গার উৎস স্থল উত্তরাখন্ড নিয়ে বলেন এবং সেখানকার দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করেন। আজকে উত্তরাখণ্ডে ধসের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বলেন উত্তরাখণ্ডের প্রধানমন্ত্রীর পাশে আছে ভারত সরকার এবং এখন সেখানে উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

মেদিনীপুরের এই পবিত্র মাটিতে আসতে পেরে নিজেকে খুব ধন্য মনে করছি। এই মেদিনীপুর এই মাটিতেই তৈরি হয়েছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। এরপর তিনি মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করা বিদ্যাসাগর মহাশয় এর স্মৃতি উন্মাদনা করে বলেন বিদ্যাসাগর মহাশয় বাঙালিকে বর্ণপরিচয় এর মত বই দিয়েছেন যা বাঙালির কাছে অত্যন্ত গর্বের।

তিনি মেদিনীপুরের এই মাটিতে আসতে পেরেছে এবং এই মাটিকে যে তিনি স্পর্শ করতে পেরেছেন নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করছেন। এদিন তিনি জানালেন, ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করতে তিনি এখানে এসেছেন। ইন্ডিয়া ডক কমপ্লেক্স মানুষের জন্য সুবিধা এনে দেবে। দুর্গাপুর গ্যাস পাইপলাইনে তৈরি হলে অনেক জেলায় জেলায় বাংলার পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস পাওয়া যাবে। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি গোটা পূর্ব ভারতে গ্যাস অনেক কম টাকায় পাওয়া যাবে। এই বছরের বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার অনেক বেশি টাকা পশ্চিমবঙ্গের ওপর ব্যয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। খড়গপুর থেকে বিজয়বাড়া যাওয়ার জন্য রাস্তা আছে তা আরও বিস্তৃত করা হবে।

এই বছরের বাজেটে চা বাগান এর সাথে যুক্ত ব্যাক্তিদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেক বেশি শুভেচ্ছা বার্তা দিলেন।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের একটি প্রশ্ন করলেন , বাংলার ইনফ্রাস্ট্রাকচার আগে অনেক বেশি উন্নত ছিল, সমুদ্রপথে হওয়া ব্যবসার সঙ্গে গোটা ভারতের কোন তুলনা হতো না ছড়াও এই বাংলার কৃষকেরা এত পরিশ্রমী, বাংলা শিক্ষা ও একসময় প্রথম ছিল । কিন্তু কেন বাংলাদেশেই উন্নয়ন আর বাংলা ধরে রাখতে পারল না? কোন দিন থেকে এখনো পর্যন্ত যদি বাংলার উন্নয়নের গতি একইভাবে ধরে রাখা হত তাহলে বাংলার আজকে উন্নয়নের দিক থেকে প্রথম থাকতো ভারতের মধ্যে। কিন্তু বাংলা এমন কি হয়ে গেল যার জন্য বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্য অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পিছিয়ে পড়লো? তিনি এই প্রশ্নের জবাব নিজেই দিয়ে বলেন বাংলার রাজনীতি হলো বাংলার এই উন্নয়নের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বাংলার সঙ্গে পরিবর্তনের আওয়াজ তুলেছিলেন কিন্তু কোথায় সেই উন্নয়ন? মমতাদির সঙ্গীরা নির্মমতার শিকার হয়ে গেল। বাংলার মানুষের এত রাজনৈতিক দলে নিজের স্বার্থ বুঝলে কিভাবে বাংলার উন্নয়ন হবে তরুণেরা কিভাবে কর্মসংস্থান পাবে?

কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বললেন, ভারতের বদনাম করার জন্য ভারতবর্ষকে বদনাম করার জন্য চারিপাশ থেকে সকলে মিলে ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেছেন। ভারতবর্ষের মানুষ স্বামী বিবেকানন্দ যিনি ভারতের বার্তা গোটা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন আজ সেই ভারতবর্ষকে বদনাম করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিদেশীরা। এই বিষয়ে কি একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একটাও কথা বলেছেন! এদিন তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন ভারতবর্ষে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঠিক রুখে দাঁড়াবেই।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে বলেন, যারা গরিবদের রক্ত নিয়েছে কেন আপনি তাদের নিজের দলে রাখছেন? এরপর তিনি আমফানের প্রসঙ্গ তুলে বললেন কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া আম্ফান এর জন্য পাঠানো টাকা এই বাংলার মানুষ পেল না কোথায় গেলে সেই টাকা? কেন্দ্রীয় সরকার এই বাংলার মানুষের জন্য বিনামূল্যের আসনের ব্যবস্থা করেছিল কিন্তু এই বাংলার সরকার তা সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে নি। এদিন তিনি জনধন যোজনা ও উজ্জ্বলা যোজনা প্রসঙ্গ তুলে বলেন, করোনাকালে জনধন যোজনায় ব্যাংকে একাউন্ট খোলা ব্যক্তিদের করোনাকালে প্রায় চার লক্ষ্যের ব্যাংকে টাকা পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের জন্য পাঠানো টাকা থেকে বাংলার কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছেন। মানুষদের এই বঞ্চিত করেছে বাংলার সরকার। এই রাজ্যের কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে পাওয়া টাকা থেকে থেকে বঞ্চিত করেছেন তৃণমূল সরকার। মাত্র ৬ হাজার কৃষকদের নামের তালিকা তিনি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন , এটা কিরকম মা মাটি সরকার।

এদিন তিনি বললেন মমতা দিদির সরকার গরিব মানুষের কথা একটুও ভাবেন না তার আরেকটা উদাহরণ হল, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যে কেন্দ্রীয় সরকারের যোজনা করা আছে সেই যোজনার সুবিধা বাংলার মানুষকে দেওয়া হয়নি। সরকার বাংলার মানুষের উন্নতির জন্য ফ্লাইওভার, রেলওয়ে লাইন, মেট্রো, বন্দর এবং এয়ারপোর্ট তৈরির জন্য অনেক টাকা কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারণ করেছেন। বাংলায় বিজেপি সরকার গেলে বাংলা থেকে করাপশন দূর হবে দুর্নীতি দূর হবে। এদিন তিনি দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের ঠিকমত দিচ্ছে না।

বললেন এদিন তিনি বললেন তৃণমূলের প্রথম সারির সব নেতারা ভাইপোর দুর্নীতির জন্য তৃণমূল ছেড়ে দিচ্ছেন। ভাইপো বাংলায় সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন। এনামুল পর্দার পিছনে ম্যাচ ফিক্সিং করার মত খেলা খেলছে। বলেন এক ভারত বর্ষ এবং এক রেশন কার্ডের প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু দেখুন আপনারাই সেই প্রকল্প এখনো বাংলায় চালু হল না।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!