লতা গেয়েছিলেন যারা আখ মে ভর লো পানি, কেঁদে ফেলেছিলেন নেহেরু

0 0
Read Time:4 Minute, 40 Second

নিউজ ডেস্ক:লতা গেয়েছিলেন জারা আঁখমে ভর লো পানি’, জহরলাল নেহেরু কেঁদে ফেলেছিলেন।অ্যায় মেরে ওয়াতান কে লোগো, তুম খুব লাগা লো নাড়া…জারা আঁখমে ভর লো পানি’, দেশের প্রতিটি মানুষের চোখে জল এনে দিতে এই দুই লাইনই যথেষ্ট। লতার কণ্ঠে দেশ ভক্তির একটা গান সরাসরি আঘাত করে লোকের মনে। এমনকি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুও অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে এই গান শুনে! তাঁর কণ্ঠ আমাদের প্রতিটি আবেগকে নাড়া দেয়। মানুষের হৃদয়ের ভালবাসা, আকাঙ্খা পূরণে তাঁর কণ্ঠ যেন ছিল ওষুধের মত। আনন্দ-দুঃখ সব অনুভূতি ভরা ছিল তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিতে।

ডিজিটালডিজিটাল যুগেও তিনি গানের জগতে অমর। তাঁর অনেক পুরনো ও দুর্লভ রেকর্ডের খোঁজে আজও সঙ্গীত প্রিয় মানুষ ঘুরে বেড়ান। ভারতের প্রায় প্রতিটি ভাষাতেই গান গেয়েছেন তিনি। প্রতিটি মানুষের হৃদয় জুড়ে ছিলেন তিনি। আজও দেশের যেকোনও গর্বের দিনে তাঁর গাওয়া দেশভক্তি গানের কোনও বিকল্প নেই তাঁর কণ্ঠে গানের প্রতিটি শব্দ জীবন্ত হয়ে ওঠে। ১৯৬৩ সালের কথা। মঞ্চে তত্‍কালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু। মাইকের সামনে দাঁড়ালেন লতা মঙ্গেশকর। ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধরলেন, ‘অ্যায় মেরে ওয়াতান কে লোগো, তুম খুব লাগা লো নাড়া…’। শুনতে শুনতে নেহেরু তাঁর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। জনসমক্ষেই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। ২০০১ সালে প্রৌঢ় বয়সেই পেয়েছিলেন দেশের সেরা সম্মান ‘ভারতরত্ন’। তারপর ২০০৭ সালে ফ্রান্সের শ্রেষ্ঠ নাগরিক সম্মান লিজিওন অফ অনার। দীর্ঘ জীবন, অসামান্য সাঙ্গীতিক মেধা, অনন্য কণ্ঠ- আজও প্লে-ব্যাকের জগতে লতার সমকক্ষ কেউ নেই। হবেনও না। মৃদুভাষী, শান্ত, বিনয়ী, কিন্তু প্রকৃতই সম্রাজ্ঞী ছিলেন তিনি। ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর অধুনা মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে জন্মেছিলেন লতা। বাবা-মায়ের দেওয়া নাম হেমা মঙ্গেশকর। লতার বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন বিখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মঞ্চাভিনেতা। মা সেবন্তি দেবী। তাঁদের পারিবারিক পদবী ছিল হারিদকর। পরিবারসূত্রে মঙ্গেশকরেরা ছিলেন গোয়ার মঙ্গেশ মন্দিরের পুরোহিত। সেই যোগসূত্রের কথা মনে রেখেই দীননাথ হারিদকর উপাধি পাল্টে তাঁদের পদবী রাখেন মঙ্গেশকর। চার সন্তানের মধ্যে হেমাই বড়। ৫ বছরের ছোট্ট লতা তানপুরা হাতে অবলীলায় তুলে নিলেন পুরিয়া ধানেশ্রীর মতো সুকঠিন রাগ। এর দু’বছরের মাথায় বাবার সাথে মঞ্চে গান গেয়েছেন, কিশোর চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন লতা। একক শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সুযোগ আসে এর পরেই। লতা তখন ন’বছরের কিশোরী। ১৯৪৩ সালে মারাঠি ছবি গজভাউ’য়ে প্রথমবার হিন্দিতে গান গাওয়ার সুযোগ এল। ১৯৪৫ সালে মাস্টার বিনায়কের সঙ্গেই বম্বে’তে পা রাখলেন লতা মঙ্গেশকর।তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি মানুষের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, সরস্বতী যেন স্বয়ং লতা রূপে ধরা দিয়েছিলেন পৃথিবীতে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!