ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষা নিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের পথেই হাঁটছে যাদবপুর
নিউজ ডেস্ক কলকাতা: ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরীক্ষা নিয়ে নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের পথেই হাঁটছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। টানা পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়মে একাধিক সরলীকরণ করছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্য়াকাল্টি কাউন্সিল অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বৈঠকে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা নিয়ে বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের থেকেও মতামত চাওয়া হয়েছে। ৮ ই এপ্রিল এর মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নিয়ে।
১০০ নম্বরের বদলে ৭০ নম্বরের পরীক্ষা করাতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় আগে যেখানে পরীক্ষার সময় সীমা তিন ঘণ্টা রাখা হয়েছিল এবার তা এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ৪ ঘন্টা করা হচ্ছে। ফাইনাল ইয়ারের ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা অফলাইন অর্থাৎ ক্লাসরুমে বসেই পরীক্ষা দেবেন ছাত্রছাত্রীরা। ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত বলা হয়েছে ওপেন বুক ইভ্যালুয়েশন অর্থাৎ বই খুলেই পরীক্ষা দিতে পারে ছাত্রছাত্রীরা। এই তিনটি প্রস্তাব নিয়ে আগামী ৮ ই এপ্রিলের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানদের রিপোর্ট পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানের থেকে রিপোর্ট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা নিয়ে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পড়ুয়ারা আন্দোলন করছিলেন। অফলাইনে এর বদলে অনলাইনেও পরীক্ষার দাবি তুলেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একাংশের পড়ুয়া। যদিও গোড়া থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনড় ছিল। শুধু তাই নয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বা জুটার পক্ষ থেকেও অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল অফলাইনেই পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষপাতী। টানা আন্দোলন চলাকালীন দীর্ঘক্ষণ সহ-উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একাংশ। যদিও শেষমেষ পড়ুয়াদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাধিকবার আলোচনায় পরে এই সিদ্ধান্তগুলি হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার চূড়ান্ত সেমেস্টারের নিয়মাবলী হিসেবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা এবং অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে অফলাইনের বদলে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তোলেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একাংশ। যদিও করোনা পরিস্থিতির কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নিয়ম সরলীকরণ হচ্ছে বলেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি। তবে বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়কে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। তিনি বলেন “বিদেশেও এই ধাঁচেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।” যদিও গোটা বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।