তিনটি জেলা ভাঙার পথে নবান্ন
নিউজ ডেস্ক জেলা ছোট হলে উন্নয়ন দ্রুত গতিতে হয়। তাতে মেলে কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত অর্থও। একই সঙ্গে প্রশাসনিক ভাবেও কাজের সুবিধা হয়। কড়া নজর রাখা যায় আইনশৃঙ্খলার দিকেও। একই সঙ্গে বাড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় বড় জেলাগুলিকে ভেঙে ছোট ছোট জেলা করার দিকে এগিয়ে চলেছেন।
তিনি জলপাইগুড়ি জেলা থেকে আলাদা করে আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হিসাবে গড়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর ভেঙে পৃথক ঝাড়গ্রাম জেলা হয়েছে। বর্ধমান ভেঙে করেছেন পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা। দার্জিলিং ভেঙে কালিম্পংকেও জেলার পৃথক করেছেন। ।আগামী দিনে সেই প্রবণতা আরও হতে চলেছে বাংলায়। রাজ্যের ৩টি বড় জেলা ভেঙে আরও ৩টি ছোট গড়ে তোলার দিকে এগোচ্ছে নবান্ন।
মুর্শিদাবাদ ও দুই ২৪ পরগনা। এই ৩ বড় জেলা ভেঙে আরও ৩টি ছোট জেলা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার খুব শীঘ্রই সেই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা হবে। তারপর রাজ্য বিধানসভায় বিল আনা হবে। বিল পাশ হলে সেটা যাবে রাজ্যপালের কাছে। তাঁর সই মিললেইসেটা বিলে রূপান্তরিত হবে। তবে এরই মাঝে নতুন জেলা গঠনের জন্য কেন্দ্র সরকারের অনুমতিও চাই। যদিও সাধারণত সেই অনুমতি পেতে সমস্যা হয় না। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে,
কেননা আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাজ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগেই নতুন জেলা গড়ার কাজ শেষ করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে ভেঙে বসিরহাট মহকুমাকে পৃথক জেলা করা হবে। তবে স্বরূপনগরকে এই মহকুমা থেকে বিচ্ছিন্ন করে বনগাঁ মহকুমার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন জেলায় দুটি মহকুমা থাকতে পারে। বাদুড়িয়া, হাড়োয়া, বসিরহাট-১, বসিরহাট-২ এই চারটি ব্লক ও বাদুড়িয়া এবং বসিরহাট পুরসভা নিয়ে বসিরহাট সদর মহকুমা গড়ে তোলা হতে পারে। অন্যদিকে হাসনাবাদ, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি-১, সন্দেশখালি-২ ও হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক নিয়ে অপর একটি মহকুমা গড়ে তোলা হবে। তবে তার সদর টাকি হবে নাকি ন্যাজাট হবে সে নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ভেঙে পৃথক সুন্দরবন জেলা গঠনের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন। সেই জেলায় ক্যানিং-১, ক্যানিং-২, গোসাবা, বাসন্তি, কুলতলি ও পাথরপ্রতিমা এই ৬টি ব্লক যে থাকছে তা একপ্রকার নিশ্চিত। সেই জেলায় যোগ করা হতে পারে জয়নগর-১, জয়নগর-২, মথুরাপুর-১ ও মথুরাপুর-২ এই ৪টি ব্লকও। অর্থাত্ মোট ১০টি ব্লক নিয়ে এই জেলা গড়ে উঠবে। থাকবে দুটি মহকুমা। একটি ক্যানিং অন্যটি সম্ভবত রায়দিঘী। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাকি ৪টি মহকুমার এলাকা সেক্ষেত্রে যেমন কমবে তেমনি সম্ভাবনা থাকছে সেই ৪টি মহকুমাকে ২টি জেলার রূপ দেওয়ার। অর্থাত্ আলিপুর ও বারুইপুর মহকুমা নিয়ে একটি জেলা অন্যদিকে ডায়মন্ডহারবার ও কাকদ্বীপ নিয়ে পৃথক একটি জেলা গড়ে তোলা হতে পারে। যদিও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি বলেই নবান্নে সূত্রে খবর। ভাঙা হবে মুর্শিদাবাদ জেলাও। জঙ্গিপুর মহকুমাকে পৃথক জেলা হিসাবে গড়ে তোলা হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে লালগোলা ব্লককে এই নতুন জেলার সঙ্গে যেমন জুড়ে দেওয়া হতে পারে তেমনি ধুলিয়ানকে পৃথক মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করা হতে পারে যা জঙ্গিপুর জেলার মধ্যেই থাকবে। তবে এই সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
একইসঙ্গে জানা গিয়েছে আগামী দিনে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকগুলি নিয়ে পৃথক একটি জেলা গড়ার চিন্তাভাবনা রাজ্য সরকারের রয়েছে তেমনি কাটোয়া ও কালনা মহকুমা নিয়ে পৃথক একটি জেলা গড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। একই সঙ্গে নদিয়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলাও ভাঙা হতে পারে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এক সঙ্গে এই সব জেলা ভাঙা হবে না। কেননা অবশ্যই আর্থিক সঙ্গতির অভাব। তবে আগামী দিনে রাজ্যে যে ছোট জেলার সংখ্যা বাড়বে।