সুন্দরবনে ডাঙায় বাঁধছে নৌকা, মাটির বাড়ি ছাড়ছে স্থানীয়রা
নিউজ ডেস্ক: সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে নদীপারের নড়বড়ে বাঁধ। ঝড় বা ঝোড়ো হাওয়া হলেই সেই বাঁধ ভেঙে বা কখনও বাঁধ উপচে জল ঢুকে যায় গ্রামে। প্রতিবছর মে মাসের এই ছবিতে অভ্যস্ত সুন্দরবনের মানুষ। তাই অশনি বাঁক নিলেও আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সুন্দরবনবাসীর। সকলেই জানেন বাঁধের অবস্থা যথেষ্ট শোচনীয়। ভেঙে যেতে পারে যেকোনও মুহূর্তে। প্লাবিত হতে পারে প্রচুর গ্রাম। পাশাপাশি আতঙ্ক কাটছে না মৎস্যজীবীদের মধ্যেও। ঝড়ের হাত থেকে রেহাই পেতে ইতিমধ্যে তারা তাদের মাছ ধরার নৌকা নদী থেকে তুলে বেঁধে রেখেছেন ডাঙায়। পাশাপাশি প্রশাসনের নির্দেশ মতো মানুষ পারাপারের লঞ্চ, বোট, নৌকাগুলিকে সরানো হয়েছে নিরাপদ স্থানে। সাম্প্রতিক অতীতে, আমফান বা ইয়াস ঝড়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই ঝড় আসার আগে নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সুন্দরবনজুড়ে।
তবে স্বস্তির কথা এই যে, হাওয়া অফিসের খবর বলছে অশনির প্রভাব বাংলার বুকে সেভাবে পড়বে না। কিন্তু, তারপরেও কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন। অশনির তাণ্ডব থেকে উপকূলবর্তী মানুষদের রক্ষা করতে ইতিমধ্যেই জোরদার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে প্রশাসনও। উপকূলবর্তী প্রতিটা জেলা প্রশাসনকেই আবহাওয়ার আপডেট নিয়ে প্রতি মুহূর্তে এলাকায় মাইকিং করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কোনও মৎসজীবী যাতে সমুদ্রে না যায় সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে মধু কিংবা কাঁকড়া সংগ্রহ করতে নৌকা নিয়ে নদীতে যেতেও কঠোরভাবে বারণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুন্দরবন অঞ্চলে সাইক্লোন শেল্টার গুলিতে উদ্ধার কাজের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছে। মাটির কাঁচা বাড়ি বা বাঁধের উপর বসবাসকারীদের ফ্লাড শেল্টার গুলিতে সময় মতো ঢুকে যাওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য, তৈরি রাখা হয়েছে এনডিআরএফ-র ১৭টি টিম। সোমবার সকাল থেকেই ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোলরুম খোলারও নির্দেশ এসেছে নবান্নের তরফে।