রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেও কপালে চিন্তার ভাঁজ সারিফা খাতুনে

0 0
Read Time:4 Minute, 53 Second

নিউজ ডেস্ক সোমবার ফল ঘোষণা হতেই সারিফার বাড়িতে ভিড় করেন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা।এদিন সকাল থেকেই পরিবারের সকলের চোখ ছিল মোবাইলে।প্রতিবেশীরা সকলেই মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শুভেচ্ছা জানাতে এদিন সারিফার বাড়িতে ছুটে আসেন।সারিফা দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে প্রতি বছরই স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থানেই থাকত।বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়ে একদিন পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। মেয়ের সাফল্যে আনন্দে গর্বিত বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সারিফা জানান,ছোটোবেলা থেকেই বাবা-মায়ের সঙ্গে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটিয়ে সাফল্য আজ হাতের মুঠোয় আসলেও উচ্চ শিক্ষার জন্য আর্থিক প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।বাবা একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা।আয় খুব সামান্য। উচ্চ শিক্ষা লাভ করে ভবিষ্যতে সে একজন আদর্শবান চিকিৎসক হতে চাই।তবে বাবার এই সামান্য আয়ে তার লক্ষ স্থানে পৌঁছাতে পারবে কিনা,তা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।তিনি আরো জানান, ছোটোবেলা থেকেই বাবার কষ্ট চোখের সামনে দেখেছে সে। গ্রামে চিকিৎসার অভাবে তার চোখের সামনে অনেক গরিব মানুষ তিলে তিলে মারা গেছে।তাই সে চিকিৎসক হয়ে গরিব মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে চাই।স্কুলের শিক্ষক থেকে গৃহশিক্ষকদের সহযোগিতা খুব ভালোভাবে পেয়েছে সে।দিনে আট ঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা ও গল্পের বই পড়তে ভালো বাসত সারিফা।বাবা-মাও সবসময় পাশে থেকেছেন। তবে সে ভাবতে পারেনি এতটা ভালো ফল করতে পারবে। তার ইচ্ছা পূর্ণ করার আর্থিক সামর্থ্য তার পরিবারের নেই,তাই সারিফা মনে প্রাণে চাইছে তার উচ্চশিক্ষা লাভে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংস্থা,কোনো সহৃদয় ব্যক্তি কিংবা আবাসিক মিশনের মতো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে স্বপ্নপূরণ হবে তার। নইলে মাটির বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে চাপা পড়ে থেকে যাবে, বাস্তবের মুখ আর দেখবে না।

সারিফার বাবা উজির হোসেন জানান,তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে।সারিফা ছোট মেয়ে।অভাবের সংসার।বাড়ির সামনে ঝালমুড়ি বিক্রি করে দিনে দুই থেকে তিনশ টাকা আয় করেন।এই সামান্য আয়ে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ ও সংসারের খরচ জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয় তাকে।তবে মেয়ের সাফল্যে গর্বিত বাবা উজির হোসেন।মেয়ে চিকিৎসক হতে চাই।এখন পরিবারে বড়ো চিন্তা আগামীদিনে মেয়ের পড়াশোনা চালানোর খরচ কীভাবে বহন করবেন সে।মেয়ের পড়াশোনার জন্য সরকার যদি একটু সহযোগিতা করে,তবে তাঁর মেয়ের স্বপ্ন সফল হবে।জীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষায় ভালো সাফল্য পেলেও আর্থিক জোগানের উপরই ভবিষ্যতের পড়াশোনা নির্ভর করছে সারিফার। তবে বাবা উজির হোসেন আরো জানান,তার সামান্য কিছু জমিজামা ও গাছপালা রয়েছে।মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজনে সেগুলি বিক্রি করে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে একজন চিকিৎসক করাবেন।

জীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষায় ভালো সাফল্য পেলেও আর্থিক জোগানের উপরই ভবিষ্যতের পড়াশোনা নির্ভর করছে সারিফার।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!