Yoga:’যোগ’ এর অর্থ হল ব্যক্তি সত্তার সঙ্গে বিশ্ব সত্তার মিলন

0 0
Read Time:5 Minute, 39 Second

শাশ্বতী চ্যাটার্জি: সংস্কৃত শব্দ ‘যুজ’ থেকে এসেছে যোগ এর অর্থ হল ব্যক্তি সত্তার সঙ্গে বিশ্ব সত্তার মিলন।যোগের জ্ঞান ৫০০০ বছরের পুরানো ভারতীয় জ্ঞান। যোগ মানে শুধুই শারীরিক কসরৎ, যেখানে জটিল পদ্ধতিতে শরীরটাকে মুচড়িয়ে, ঘুরিয়ে, টেনে ফেলতে হয় এবং কিছু কঠিন শ্বাসের ক্রিয়া করা হয়ে থাকে। 

যোগার প্রকারভেদ-

হস্ত যোগাসন – এটি সাধারণত শরীরে স্বস্তি ও মস্তিস্ককে আরাম প্রদান করে থাকে। পিঠ টানটান করে সোজা হয়ে বসে হাত দুটো ওপর দিকে করে জড়ো করে এটি করা হয়ে থাকে।

আয়েঙ্গার যোগাসন – এতে পদ্মাসনকে বোঝানো হয়। মস্তিষ্কে শান্তি ও চাপ কমাতে এটি খুব কার্যকরী।

কুন্ডলিনী যোগাসন –  তন্ত্র ও ধ্যানের মাধ্যমে সাধনা করে নিজের অন্তরের কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগিয়ে তোলার নাম হল কুণ্ডলিনী যোগাসন। এর দ্বারা মনের জোর ও আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

অষ্টাঙ্গনা যোগাসন – এই  ধরণের যোগাসনে  বেশ শারীরিক পরিচর্যা ও ব্যায়াম হয়ে থাকে। এতে ওজন কমানো ও নানারকমের শক্তি পরিচর্চযা করা যায়।

বিনায়ক যোগাসন – এটি ভারতবর্ষের একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে করা হয় যা বিশেষ করে বিনায়ক মহাবিদ্যালয় থেকে প্রচারিত।

বিক্রম যোগাসন – এই যোগাসনে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দ্বারা গভীর নিশ্বাস নিয়ে একটি গরম তাপমাত্রার ঘরে অনুশীলন করা হয়।

হট যোগাসন – বিক্রম যোগাসনের মত হট যোগাসনও গরম তাপমাত্রায় করা হয়, কিন্তু তার জন্যে যে কোনো গরম তাপমাত্রার ঘর প্রয়োজন তা নাও হতে পারে।

কৃপালু যোগাসন – এটি অনেকটা হাত যোগাসনের মত। কৃপালু যোগাসনে ভগবানকে স্মরণ করে সাধনা করা হয়।

জীবমুক্তি যোগাসন – ভক্তি, অহিংসা ও ধ্যান বাড়ানোর জন্যে যেই শারীরিক, নৈতিক ও আধ্যাতিক যোগাসন করা হয় তাকে বলা হয় জীবনমুক্তি যোগাসন।

ইন যোগাসন – এই যোগাসন একটু ধীর গতিতে অনেক্ষন সময় নিয়ে করা হয়।

রেস্টোরেটিভ যোগাসন – নতুন করে নিজের দৈহিক ও মানসিক স্থিতিকে আবিষ্কার করে সেই পথে এগোনোর নাম হল রেস্টোরেটিভ যোগাসন।

মাতৃত্ব পূর্ব যোগাসন – এই  ধরণের যোগাসন গর্ভাবস্থার আগে বা গর্ভাবস্থার সময় করা হয় যার ফলে পরবর্তীকালে একটি সুস্থ সবল শিশু জন্মায় ও মায়ের শারীরিক অবস্থা ভাল থাকে।

অনুসরা যোগাসন – এই যোগাসনের মাধ্যমে আধ্যাতিক চিন্তাভাবনা বাড়িয়ে তোলা হয়।

অদ্ভুত প্রকারের যোগাসন – এমন অনেক যোগাসন রয়েছে যা অন্যান্য যোগাসনের তুলনায় একটু অদ্ভুত কিন্তু বেশ প্রচলিত। যেমন মধু বা মোদের সাহায্যে যোগাসন, হাসি বা কান্নার মাধ্যমে যোগাসন, কোনো পশু বা পাখির সাহায্যে যোগাসন, ইত্যাদি।

যোগাসনের নিয়মাবলী –

সঠিক পোষাক
ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোষাক পরে যোগাসন করতে হয়। তার সাথে অবশ্যই দরকার একটি যোগাসন করার ম্যাট যার ওপরে বসে অনুশীলন করতে হবে। যোগাসন সবসময় খালি পায়ে করা উচিত।

খাওয়ার নিয়ম
যোগাসন করার অন্তত ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে খাবার খাওয়া যায় এবং হয়ে যাওয়া ২ ঘণ্টা পর খাওয়া যায়। না’হলে শরীরে অস্বস্তি হতে পারে।

নিঃশ্বাস প্রশ্বাস
যোগাসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ শেখার বিষয় হল নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের দিকে খেয়াল রাখা তাতে ফল পাওয়া যায়।

জোর না করা 
জোর করে না করে ধীরে ধীরে করা উচিৎ নাহলে শরীরে ব্যাথা আরো বেড়ে যাবে।

ওজন কোনো বাধা নয়
অনেকের ধারণা, যোগাসন করতে গেলে খুব সাবলীল ও রোগ শরীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু একথা একেবারে ভুল। আপনার ওজন যাই হোক না কেন, আপনি তা নিয়েই নিজের সুবিধা মত যোগাসন করতে পারেন।

বৈজ্ঞানিকভাবে যোগাসনের সঠিক সময় ভোর বেলা। এছাড়া, সূর্য ওঠার সময় যোগাসন করা হল সব থেকে ভাল সময়। ভোরের শীতল ও সতেজ আবহাওয়ায় শ্বাস নিলে শরীর ও মন দুটিই সতেজ থাকে। এর ফলে আপনার সারাদিনের কাজকর্ম ভালোমত এগোবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!