TMC:দলত্যাগীদের যোগদানে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন সাংসদের
শাশ্বতী চ্যাটার্জি::হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, একুশের ভোটে বিপুল জয় পাওয়ার পরও কেন দলত্যাগীদের ফেরানো হচ্ছে।
প্রকাশ্যেই দলীয় নেতৃত্বের এই ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তিনি।তাঁর কথায়, একুশের ভোটের আগে দলের খারাপ সময়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর তৃণমূল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ভোটে জেতার পর পুরনো দলে ফিরে আসছেন দলত্যাগীরা। আর তৃণমূলে ফিরে এসে বিজেপি সম্পর্কে বিষোদ্গার করছেন। দলত্যাগীদের এই ভূমিকা যেমন অসহনীয়, তেমনই তৃণমূল যেভাবে দলত্যাগীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাও ঠিক নয়।
হাওড়া সদরের তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাঁরা দল ছেড়েছিলেন, তাঁরা স্পষ্টতই দলের ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন। তারপর তাঁদের ফের দলে স্থান দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল সরকার গড়ার পর তাঁদের ঘরওয়াপসি হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। যাঁরা একসময় দলকে বিপদে ফেলে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের কেন স্থান দেওয়া হচ্ছে, কেন ফেরানো হচ্ছে দলে?
এদিন তিনি দলত্যাগীদের দলে ফেরানো নিয়ে প্রতিবাদের সুর চড়ান। এখন তাঁর এই প্রতিবাদ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কার বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করেন, কার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন তিনি? তৃণমূলে কারও যোগদান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতি ছাড়া হয় না। তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই তাঁর প্রতিবাদ?
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জবাব অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে দিয়েছেন তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষ। তিনি বলেন, দলে কারা ফিরবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে মন্তব্য করা বৃথা। আমরা সবাই দলের একনিষ্ঠ কর্মী। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে কাজ করাই আমাদের কর্তব্য।
তাঁর কথায়, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ব্যক্তিগত মত জানিয়েছেন। সম্প্রতি অনেক নেতাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। আরও নেতারা আসবে। রাজীব বন্যোনেপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জেলা নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তার নিবৃত্তি ঘটে শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে। তারপর সম্প্রতি অর্জুন সিংও যোগ দেন তৃণমূলে। একুশের নির্বাচনে জেতার পর মুকুল রায়ের ঘরওয়াপসি ঘটে। তারপর থেকে একে একে অনেক নেতাই ফেরেন বাংলার শাসক দলে।
বর্তমানে শোভন চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন নবান্নে গিয়ে। তারপর থেকে শোভনের ঘরওয়াপসি নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় দলত্যাগীদের দলে ফেরানো নিয়ে সরব হলেন প্রসূন। তাঁর মতে এই প্রবণতা দলত্যাগী সুবিধাবাদীদের প্রশ্রয় দেওয়ার নামান্তর। কারণ এঁরা নিজেদের সুবিধা ভোগের জন্য দল করেন।