পুরীর রথযাত্রার ইতিহাস, প্রচলিত আচার-রীতি

0 0
Read Time:3 Minute, 27 Second

শাশ্বতী চ্যাটার্জি::জগন্নথধাম পুরী ঘিরে একাধিক রহস্যময় কাহিনি প্রচলিত রয়েছে । মূলত পুরীর মন্দির ঘিরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রহস্যময় কাহিনিও উঠে এসেছে।
আগে দেখে নেওয়া যাক, পুরীর রথযাত্রা ঘিরে কোন ইতিহাস রয়েছে। কোন কোন বিশেষ রীতিই বা পালিত হয় এই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে, জেনে নেওয়া যাক।

ওড়িশার প্রাচীন পুঁথি ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ অনুযায়ী সত্যযুগ থেকে চালু হয়েছে এই রথযাত্রা। সেই সময় ওড়িশার নাম ছিল মালব দেশ। সেই সময় সেখানের রাজা ইন্দ্রদ্যুন্ম স্বপ্ন পেয়েছিলেন বিষ্ণু মন্দির গড়ার। তে মন্দির কেমন , হবে সেসম্পর্কে রাজার তেমন ধারণা ছিল না।

মন্দির স্থাপন করে জগন্নাথ , বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি তৈরি ঘিরে বিশ্বকর্মাকে অসন্তুষ্ট করে ফেলেন ইন্দ্রদ্যুন্ম। যার জেরে দেবদেবীদের সম্পূর্ণ মূর্তি নির্মাণ না করেই চলে যেতে হয় বিশ্ব কর্মাকে। এদিকে, কথিত রয়েছে, যে শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে রথে চড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে দেখতে যান জগন্নাথদেব। সেই উপলক্ষ্যে ওই তিথি মেনে গুন্ডিচা মন্দিরে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার আয়োজন হয়। এই যাত্রাকে সোজা রথ যাত্রা বলা হয়। এরপর সাত দিন পর মন্দির থেকে দেবতার ফিরতি যাত্রাকে উল্টোরথ যাত্রা বলা হয়। যদিও মাসির বাড়ি যাওয়া নিয়ে রথ যাত্রার আরও এতটি পৌরাণিক কাহিনিও শোনা যায়।

প্রায় আনুমানিক সাতশো বছরের পুরনো পুরীর রথযাত্রা উৎসব। জানা যায়, এই যাত্রা ২ টি ভাগে বিভক্ত ছিল। দুটি ভাগে তিনটি করে মোট ৬ টি রথ বের হত। সেই যুগে রথযাত্রার রাস্তায় পড়ত বলাগুন্ডি নালা। তা পরা করার জন্য দেবতাদের মূর্তি মাঝপথে রথ থেকে নামিয়ে নালা পার করে নতুন রথে রাখা হত। এরপর রাজা কেশরী নরসিংহের আমলে এই নালা বন্ধ করা হয়। তারপর থেকে ৩ টি রথেই পুরীর রথযাত্রা সম্পন্ন হয়।

যে গুন্ডিয়া রথযাত্রার কথা বারবার পুরীর ইতিহাস ঘিরে আসে, শোনা যায়, তিনি একজন মহিলা। পুরাতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদদের মতে তএই গুণ্ডিচাই রাজা ইন্দ্রদ্যুন্মের স্ত্রী। পুরীর এই রাজবংশ আজও বর্তমান। বংশপরম্পরায় রাজা উপাধিতে অনেকেই ভূষিত হয়েছেন। আর তাঁদের হাত ধরেই পুরীর রথযাত্রায় পুষ্পাঞ্চলি প্রদান থেকে , সোনার ঝাড়ু ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!