তৃণমূল-বিজেপির ‘গোপন আঁতাত’!

0 0
Read Time:4 Minute, 44 Second

নিউজ ডেস্ক::কথায় বলে রাজনীতিতে স্থায়ী বন্ধু আর স্থায়ী শত্রু বলে কিছু হয় না।

বর্তমানে বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন সেই সুরেই চলছে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি আর তৃণমূল কাছাকাছি এসেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তৃণমূলের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন বলে দাবি করা হয়েছে। উপনির্বাচনে তৃণমূল ভোটে অংশগ্রহণ না করলে তা যে আদতে এনডিএ-এর প্রার্থী জগদীপ ধনখড়ের সুবিধা হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিরোধী শিবিরের একাংশের অভিযোগ, দার্জিলিংয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি একটি গোপন চুক্তি করেছে। আর তার জন্যই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। বিরোধী শিবিরের একাংশের বক্তব্য, ১৩ জুলাই দার্জিলিংয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে জগদীপ ধনখড় উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই গোপনে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের চুক্তি হয় বলে অভিযোগ। ধনখড়কে তারপরেই এনডিএ উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঘোষণা করা হলে এই জল্পনার পারদ বাড়তে থাকে। সেই জল্পনার আগুনে ঘি ঢালে তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত। বাংলায় অনেক আগে থেকেই সিপিআই(এম) ও কংগ্রেস বারবার ‘মোদী-দিদি সেটিং’ বলে অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগে প্রেক্ষিতে একাধিক রাজনৈতিক ঘটনাবলী বর্তমানে ঘটতে শুরু করেছে।

তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজনৈতিক মঞ্চে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতা সরাসরি বিজেপি ও তৃণমূলের গোপন আঁতাতের অভিযোগ করেছেন। তবে বাম, কংগ্রেস, আইএসএফ তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির গোপন চুক্তির প্রচার শুরু করলে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে রাজ্যের শাসক দল। ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ব্যাপক জয়ের নেপথ্যে একটা বড় ভূমিকা ছিল সংখ্যালঘু ভোটের। বাংলায় প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছে। এই গোপন চুক্তির অভিযোগের জেরে তৃণমূল বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে। অন্যদিকে, সিবিআই ও ইডির তলবে জেরবার তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। সিবিআই তলবের মুখে পড়তে হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কেন্দ্রীয় সংস্থার তলব এড়াতে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের গোপন আঁতাতের খবরের প্রচারে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শাসক দলের দুরত্ব বাড়তে পারে।

তৃণমূলের সঙ্গে গোপন আঁতাতের খবরে বিজেপি নিচুতলার কর্মীদের কাছে গ্রহণ যোগ্যতা হারাতে পারে। বিজেপির তরফেই অভিযোগ করা হয়েছিল, ভোট পরবর্তী হিংসায় তাদের বেশ কয়েকজন নেতা ও কর্মী খুন হয়েছেন। বহু সমর্থক তৃণমূলের ভয়ে ঘরছাড়া। নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরতে পারছেন না। মাত্র তিন মাস আগে রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, বাংলায় গেলে তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন। তারপরেই গোপন চুক্তির খবর বিজেপির নিচু তলার কর্মীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। তবে ১৩ জুলাই দার্জিলিংয়ে কী হয়েছিল, তা বলা সম্ভব নয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!