চেস অলিম্পিয়াডে কেন খেলছেন না বিশ্বনাথন আনন্দ?
নিউজ ডেস্ক::চেস অলিম্পিয়াডের সূচনা হলো আজ।
জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের উপস্থিতিতে। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দ। এরই মধ্যে রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে নিল পাকিস্তান। ফলে পাক দাবাড়ুদের সঙ্গে ভারতীয়দের দ্বৈরথ আর হচ্ছে না।
পাকিস্তানকে চেস অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল চেস ফেডারেশন বা ফিডের তরফে। মহাবলীপুরম বা মামল্লপুরমে বসছে চেস অলিম্পিয়াডের আসর। চলবে অগাস্টের ১০ তারিখ অবধি। পাকিস্তানের তরফে আজই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাক দাবাড়ুরা এই ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে না। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, চেস অলিম্পিয়াডের টর্চ বা মশাল রিলে হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরে। প্রতিবেশী দেশের ‘বিতর্কিত জায়গা’ দিয়ে মশাল রিলে যাওয়াকেই এই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তান।
অলিম্পিয়াড ডিরেক্টর তথা সর্বভারতীয় দাবা ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ভরত সিং চৌহান বলেন, পাকিস্তান সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আজ রাতেই পাক দাবাড়ুরা দেশে ফিরে যাবেন। আজই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক চেস অলিম্পিয়াড বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে রাজনীতিকে খেলার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে তার নিন্দা করেছে পাকিস্তান। এই বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের শীর্ষস্তর অবধি নিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পাকিস্তান। যদিও এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ঐতিহ্যশালী এই আন্তর্জাতিক ইভেন্ট নিয়ে পাকিস্তানের ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক। পাকিস্তানই গোটা বিষয় নিয়ে রাজনীতি করছে। উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে চেস অলিম্পিয়াড সরে যাওয়ার পর তা ভারতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রথমবার ভারতে হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। ওপেন সেকশনে রেকর্ড সংখ্যক ১৮৮টি ও মহিলাদের বিভাগে ১৬২টি দলের অংশ নেওয়ার কথা। ভারতের ৬টি দল থাকছে।
তবে নিজের শহর চেন্নাইয়ে হলেও বিশ্বনাথন আনন্দ কেন এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন না তা নিয়েও জল্পনা চলছে। যদিও আনন্দ জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে সরে চেস অলিম্পিয়াড ভারতে আসায় তিনি একবারও এই ইভেন্টে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নিজের অবস্থান বদলের পথে হাঁটেননি। আনন্দ বলেন, আমি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি চেস অলিম্পিয়াডে নামব না। তা যেখানেই হোক না কেন। আমি নিজের কমিটমেন্ট কিছুটা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সার্কেলে যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করব না। ভারতে এখন অনেক ভালো দাবাড়ু রয়েছেন। ফলে আমরাই কেন বারবার খেলব? আশা করি, এই দাবাড়ুরাই ভালো ফল করবেন।
আনন্দ আরও বলেন, আমি সর্বদা তাঁদের পরামর্শ বা যে কোনও সহযোগিতার জন্য রয়েছি। ইতিমধ্যেই কয়েকজন দাবাড়ুর সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সেটা আরও প্রসারিত হতেই পারে। মেন্টরের ভূমিকা পালন করা উপভোগ করছি। ওপেন সেকশনে এবং মহিলাদের বিভাগে ভারতের তিনটি করে দল খেলছে। সেই দাবাড়ুদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন আনন্দ। প্রথমেই বলে দিচ্ছেন, চাপ দূরে রাখতে। ভারতে খেলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের চাপে রাখলে তাতে লাভের লাভ হবে না। ভারতে এই প্রতিযোগিতায় হওয়ার কথা ছিল না। তা হচ্ছে। তামিলনাড়ুতে খুব আগ্রহ রয়েছে। চেস অলিম্পিয়াডের সদর্থক প্রভাব দেশের দাবার ক্ষেত্রে পড়বে বলেও আশাবাদী আনন্দ।