মমতা ব্যানার্জির জীবনকাহিনী জানেন? তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠার গল্প দেখুন

0 0
Read Time:7 Minute, 3 Second

নিউজ ডেস্কঃ রাজনীতিতে যে প্রতিভা কাজ করে তা দেখিয়েছেন এই মমতা ব্যানার্জি যিনি পশ্চিমবঙ্গসহ ভারত মহারাষ্ট্রে দিদি নামে পরিচিত।

মমতা ব্যানার্জির জন্ম ও কৈশোর –
১৯৫৫ সালের ৫ই জানুয়ারি কলকাতার হাজরা অঞ্চলের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী পিতা প্রমীলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। শৈশব ও কৈশোরের সময়টুক কাটে পরিবারের সাথে।

মমতা ব্যানার্জির পড়াশোনা বা শিক্ষাজীবন –
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু করেন জন্মস্থানের বিভিন্ন স্কুলে। তিনি কলকাতার শ্রীশিক্ষালয়তন হতে বিএ পাস করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ পাস করেন। এছাড়া, কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

মমতা ব্যানার্জির পেশাগত জীবন –
পড়াশোনা করাকালীন তিনি সক্রিয় একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে নিজেকে অন্তর্ভূক্ত করেন। শিক্ষাজীবনেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গেলে জীবনের একটা সময় তিনি শিক্ষকতা করেছেন।

মমতা ব্যানার্জির বিয়ে বা বৈবাহিক জীবন –
অনেকেই জানতে চান পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির স্বামীর নাম কি? আসলে মমতা ব্যানার্জি বিয়ে করেননি।

মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক জীবন –

মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ঊনবিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে। রাজনীতির শুরুতে তিনি একেবারে সাধারণ একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে। সাধারণ একজন কর্মী হিসেবে শুরু করা এই রাজনৈতিকের মধ্যে যে সম্মোহনী ক্ষমতা রয়েছে তা দলের বর্ষীয়ান নেত ও ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বুঝতে পেরে তা লিখে গেছেন।

তিনি দলের নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর একনিষ্ঠ ভক্ত যার রাজনৈতিক জীবনের প্রথম অংশ কাটে প্রণব মুখার্জির ছায়ায়। খুব অল্পসময়েই তিনি কংগ্রেস নেত্রীর আক্ষা লাভ করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কংগ্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি কেন্দ্রের নজর কাড়তে সক্ষম হন মূলত তাঁর পরিশ্রম, মেধা, উদ্যোম ও লড়াই করার মনোবাসনার জন্য। তারই প্রতিফলন ঘটে ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার যাদবপুরের একটি আসনে সোমনাথ চ্যাটার্জির মত প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতাকে পরাভূত করত। সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে জয় লাভ করা।

এরপর অবশ্য তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি কংগ্রেস বিরোধী হয়ে উঠায় ১৯৮৯ সালের ভোটে তাকে হারতে হয়েছে। এদিকে, ৯১’র নির্বাচনে অংশ নিয়ে আবারও লোকসভার সদস্য হন এবং কলকাতা দক্ষিণ আসন হতে পাঁচবার জয়লাভ করেন।

মমতা সর্বপথম রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ১৯৯১ সালে মন্ত্রীসভায় নাম লিখান এবং রেল মন্ত্রী হিসেবে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ১৯৯৯ সালে। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মূল দল থেকে বের হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন।

মমতা ব্যানার্জী কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৯৯৮ সালে, এবং কিছুকালের মধ্যেই এটি পরিণত হয় বামফ্রন্ট শাসিত পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলে।

বামফ্রন্ট সরকারের সময় ২০০৫ সাল থেকে পরবর্তী কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প স্থাপনের জন্য কৃষিজমি বরাদ্দের কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণঅসন্তোষ তৈরি হয়।

বিশেষ করে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে জমি রক্ষার জন্য গড়ে ওঠা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলে পরিণত হয় তৃণমূল কংগ্রেস।

নন্দীগ্রামে আন্দোলনরত জনতার ওপর পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৪ জন নিহত হবার পর পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার-বিরোধী মনোভাব জোরদার হয়ে ওঠে।

নন্দীগ্রামে কৃষকদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে মমতা ব্যানার্জী হয়ে ওঠেন রাজ্যের জনপ্রিয় নেতা।

এছাড়াও ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বামফ্রন্টের চাইতে বেশি আসন পায় তৃণমূল।

আর তার দুই বছর পর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধে মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল দল ওই রাজ্যে ৩৪ বছর ধরে ক্ষমতাসীন থাকা বামফ্রন্টকে হারায়।

মমতা ব্যানার্জী হন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী। এরপর থেকে তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় আছেন।

এর পর ২০১৬ এবং ২০২১এর নির্বাচনেও জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিদায়ী রাজ্য বিধানসভার ২৯৫টির মধ্যে তাঁর দলের হাতে ছিল ২১১টি আসন। ২০২২ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এখনো সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে, এই যুগে তাঁকে কুর্নিশ জানানোও অনেক কম হয়ে যাবে। লক্ষ লক্ষ নারীর অনুপ্রেরণা তিনি। দিদি তুমি এইভাবেই সবসময় সকলের দিদি হয়ে থেকো।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
100 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!