মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিরোধীদের চার মুখ!
নিউজ ডেস্ক ::বিহারে মহাজোটে ফিরে এসেছেন নীতীশ কুমার।
ফলে ২০২৪-এর প্রধানমন্ত্রীত্বের লক্ষ্যে বিরোধী শিবিরে আরও এক প্রতিযোগিত সংখ্যা বেড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে থাকেন, ইতিমধ্যেই বিরোধী শিবিরে যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর পদের দৌড়ে রয়েছেন তাঁরা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং রাহুল গান্ধী। এর মধ্যে সবারই কোথাও না কোথাও শক্তি রয়েছে, আবার রয়েছে দুর্বলতাও। তা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্তির মধ্যে রয়েছে তিনি মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। বামেদের ৩৪ বছরে দূর্গ ভেঙে তিনি গত ১১ বছর ধরে রাজত্ব করছেন। তিনি বর্তমানে জেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। মহিলা ভোটারদের ওপরে তাঁর যথেষ্টই প্রভাব রয়েছে। তাঁর দুর্গ ভেদ করতে পারেনি বিজেপি। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ভাল করে জানেন, কীভাবে জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করতে হয়।
পশ্চিমবঙ্গেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্তি। রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আসন তৃণমূলের দখলে রয়েছে। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে এক পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে করা সমীক্ষায় তাঁরা ৩৮ টি আসনে জয়ী হতে পারেন বলে বলা হয়েছে। সেখানে বিজেপি পেতে পারে ৪ টি আসন। শেষ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি দাঁড়ালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠবেন।
বাংলায় জননেত্রীর ইমেজ। এছাড়াও তিনি দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল, সেই ইমেজ তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এই ইমেজ শুধু বাংলাতেই সীমাবদ্ধ নেই দেশের অন্যরাজ্যেও তাঁর এই ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতন শক্তি হল তাঁর সংগ্রামী ভাবমূর্তি। তাঁকে সাধারণ মানুষ সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের আন্দোলনে দেখেছে। দেখেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে যখন মোদী-অমিত শাহরা একযোগে সভা করেছেন বাংলায়, সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনিই ২৯৪ টি কেন্দ্র প্রার্থী। সেই মতো যেন সাধারণ মানুষ ভোট দেন।
দুর্বলতার মধ্যে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভাল হিন্দি বলতে পারেন না। যে কারণে তিনি হিন্দিভাষী অঞ্চলের মানুষের প্রতি সরাসরি বার্তা দিতে পারেন না। ইংরেজির ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই।
২০২১-এ বাংলায় তৃতীয়বার জয়ের পরে তৃণমূলের তরফে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরা, গোয়ার মতা রাজ্যে রাজনৈতিক ভিত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করলেও তারা সফল হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। এর মধ্যে সব থেকে বড় দুর্নীতি হল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি। গত দিন কুড়ির মধ্যে দলের দুই শীর্ষ নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়াও দলের একাধিক নেতা ইডি-সিবিআই-এর স্ক্যানারে রয়েছে।
কংগ্রেস শাসনের সময় বিরোধীদের প্রচারের ছিল কংগ্রেসের পরিবারবাদ। এরপর বিজেপির শাসনে গেরুয়া শিবির পরিবারবাদ না থাকলেও তারা বিহার, তেলেঙ্গানা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে পরিবারবাদের অভিযোগ করেছে। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমলের জন্ম সিপিএম বিরোধিতায়। রাজ্যে সিপিএম-এর শাসন শেষ। সেক্ষেত্রে তারা ভবিষ্যত রাজনীতি সম্পর্কে কোনও দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরতে পারেনি। যা দেখা গিয়েছে
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে। যশবন্ত সিনহাকে তিনি প্রার্থী করলেও, নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অনেক রাজ্যই এড়িয়ে দিয়েছেন।