চিটফান্ড ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যে বড় খবর!
নিউজ ডেস্ক ::রাজ্যে একের পর এক ভুঁইফোড় বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল।
সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের গ্রেফতারের পরেই একের পর এক চিটফান্ড সংস্থার কেলেঙ্কারি সামনে আসে। আর সেই সমস্ত চিটফান্ড সংস্থায় লক্ষ লক্ষ মানুষ টাকা রেখেছিলেন। সেবি কিংবা আরবিআইয়ের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছিল ওই সমস্ত সংস্থা।
বিশেষ করে সারদা, আইকর, টাওয়ার এবং পৈলানের মতো চিটফান্ড কোম্পানিগুলি কেলেঙ্কারি ইতিমধ্যে সামনে এসেছে। যদিও সারদার বিপুল সম্পত্তি নিয়ে ডুবতেই এই সমস্ত সংস্থাও আর সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। বিশেষ করে ২০১৪ সালে সারদা কাণ্ডের পর একের পর এক বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার নাম প্রকাশ্যে আসতেই সারা রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়।
শুধু তাই নয়, বহু আমানতকারী এই সমস্ত চিটফান্ডে টাকা রেখে রীতিমত সর্বশান্ত হতে হয়। এমনকি আত্মত্যা পর্যন্ত করতে হয়। এজেন্টদের রাতারাতি ঘরছাড়াও হতে হয়েছিল। এরপরেই বিচার চেয়ে কিওল্কাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন বহু আমানতকারী।
কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম সারদা কোম্পানি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।
যদিও পরবর্তীকালে জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সিবিআই তদন্ত শুরু হয়। মামলা ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টে।
তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর নির্দেশে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত হয় বিশেষ বেঞ্চ। আর এরপরেই আমানতকারীদের অভাব অভিযোগ শুনতে শুরু করে এই বিশেষ বেঞ্চ। কিভাবে ফেরত পাবে আমানত কারীদের কোটি কোটি টাকা? ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করলেন প্রাক্তন বিচারপতি এস পি তালুকদারের একক কমিটি।
বিভিন্ন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কোথায় কোথায় কত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করে কিভাবে সম্পত্তি আমানতকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া যায় শুরু হয় তোড়জোড়।
আমানতকারীদের পক্ষে আইনজীবী অরিন্দম দাস বার বার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কি ভাবে গরিব খেটে খাওয়া মানুষের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায়। প্রাক্তন বিচারপতি এস পি তালুকদারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে উদ্যোগী হন তিনি। অবশেষে আশার আলো দেখতে শুরু করলেন আমানতকারীরা।
মঙ্গলবার বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা পৈলান গ্রপের যাঁরা আমানতকারীদের কাউন্সিল স্ট্রিট হাউসে কয়েকশ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়। ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০,০০০হাজার টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হয়। প্রায় ৮৫ হাজার আমানতকারীর হাতে এই টাকা তুলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আগামীকাল বুধবার, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অরিন্দম বাবু। পাশাপাশি আরও এক লক্ষ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।