দ্বীপরাষ্ট্রের পতাকা হাতে ছবি তুললেন গম্ভীর

0 0
Read Time:5 Minute, 33 Second

নিউজ ডেস্ক::এশিয়া কাপ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল তাঁদের দেশে। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা এমনই টালমাটাল যে দিন-রাতের ম্যাচে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া অসম্ভব, টিম বাসের প্রয়োজনীয় ডিজেল নেই। একটা গোটা দেশ যখন চরম অর্থকষ্ট থেকে পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য মরিয়া, একটু ভাল ভাবে বাঁচার তাগিদে নিরন্তন লড়াই চালাচ্ছে সেই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থায় যে তলানিতে তা বলার অপেক্ষা রাথখে না।
এত কিছু প্রতিকূলতাকে সঙ্গে নিয়ে যে লড়াইটা শ্রীলঙ্কার নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা দেখাল তাকে বিশ্ব ক্রিকেট কুর্ণিশ জানাতে বাধ্য। ক্ষুধার জ্বালায় জর্জরিত মানুষদের মুখে একটু হলেও হাসি ফুটিয়েছে এই ক্রিকেট। এশিয়া কাপ জিতে হাজারো নেই-এর মাধ্যেও কিছু একটা অর্জন করার অনুভূতি গোটা দেশকে নতুন করে বাঁচার তাগিদ দেবে তা নিশ্চিত।

দলের মধ্যে একটিও তারকা নেই। এমন কোনও বড় নাম নেই যাঁকে ডরায় বিশ্ব ক্রিকেট। তবুও নিজেদের সঙ্গবদ্ধ মরিয়া লড়াই এবং হাল না ছাড়া মনোভাবের জন্য শ্রীলঙ্কা আবারও এশিয়া ক্রিকেটের সেরা। ডসুন শনকার দল ছন্দে থাকা পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের জন্য শ্রীলঙ্কাকে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন করল। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সেরা উদাহরণ রেখে ফাইনালে শক্তিশালী পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে শ্রীলঙ্কা। ৫৮/৫ থেকে ১৭০/৬-এ শেষ করতে গেলে প্রয়োজন পড়ে নিজেের উপর মারাত্মক আত্মবিশ্বাস এবং হার না মানা মনোভাব। দীপরাষ্ট্রের দলটি সেই শপথ নিয়েই মাঠে নেমেছিল। ১৪৩ রানে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিয়ে এশিয়া কাপ জিতে যন্ত্রণাক্লিষ্ট দেশবাসীর মনে হাসির কিছুটা হলেও হাসির সঞ্চার করতে পেরেছে এই দল।

নিজের দেশকে গৌতম গম্ভীর কতটা ভালবাসেন তা নতুন করে বলে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। তাঁর মতো দেশপ্রেমী আধুনিক দিনে অত্যন্ত বিরল। পেশাদারিত্বের মধ্যে দেশপ্রেম ধীরে ধীরে অনেকের মধ্যে থেকে হারিয়ে গেলেও গম্ভীর বরাবরই সব সময়ে সব কিছুর আগে রেখে এসেছেন দেশকে। ভারতীর এই কৃতি সন্তান শুধু নিজের দেশকেই নয়, অন্য দেশের প্রতিও তাঁর ভালবাসার প্রমান দিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তানের মধ্যে এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার পতকা হাতে নিয়ে ছবি তোলেন গম্ভীর। ঠিক যেমনটা তিনি ভারতের পতাকা হাতে নিয়ে গর্বের মুহূর্ত অনুভব করেন ঠিক তেমনই নানান সমস্যায় জর্জরিত শ্রীলঙ্কার পতাকাকে হাতে নিয়ে বুকের সামনে ধরে ছবি তোলেন।

ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশ-এই দেশগুলির প্রধান খেলাই হল ক্রিকেট। ক্রিকেটকে কেন্দ্র করে শতশত সমস্যাকে উপেক্ষা করেও মানুষ হাজির হয় স্টেডিয়ামে। চরম অর্থকষ্টের মধ্যেও শ্রীলঙ্কার মানুষরা কী ভাবে মাঠ ভরিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া দলের সফরের সময় তা এখনও চোখে ভাসে। এশিয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ স্তরে শ্রীলঙ্কার এই লড়াই এবং ট্রফি জয় নতুন করে বাঁচার তাগিদ দেবে শ্রীলঙ্কাবাসীকে। ক্ষুধার জ্বালায় জর্জরিত মানুষদের মুখে একটু হলেও হাসি ফুটিয়েছে এই ক্রিকেট। এশিয়া কাপ জিতে হাজারো নেই-এর মাধ্যেও কিছু একটা অর্জন করার অনুভূতি গোটা দেশকে নতুন করে বাঁচার তাগিদ দেবে তা নিশ্চিত।

আনকোরা, অনভিজ্ঞ একটা দলকে সঙ্গে নিয়ে এশিয়া কাপ জেতা শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ডসুন শনকা বলেন, ‘আমি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাদের (ভাল-খারাপ সময়ে) সব সময়ে সমর্থন করে গিয়েছেন তাঁরা। আশা করি আজ তাঁদের গর্বিত করতে পেরেছি আমরা। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড এবং নির্বাচকদেরওধন্যবাদ জানাতে চাই আমি।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!