৫১ পীঠের অন্যতম কালীঘাট মন্দির

0 0
Read Time:4 Minute, 0 Second

নিউজ ডেস্ক::‘কালীঘাটে চারিটি আঙ্গুল ডানি পার
নকুলেশ ভৈরব কালিকাদেবী তার।’

  • কবি ভারচন্দ্রের কাব্য এই তথ্য পাওয়া গেলেও অনেকে বলেন,কালীঘাটে সতীর একটি আঙ্গুল পড়েছিল।
    পুরান মতে কালীঘাটের কালী মন্দিরে টির পাশে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর এর অবস্থান।দেবীএখানে ভৈরবী , বগলা , মাতঙ্গী , বিদ্যা , কমলা , ব্রাহ্মী , মহেশ্বরী , চণ্ডী প্রভৃতি রূপে পূজিতা । দীপান্বিতা অমাবস্যাতে দেবীকে মহালক্ষ্মী রূপে পূজা করা হয়।
    পূরণের ঘটনা আমরা সবাই জানি।শিবপত্নী সতী বিনা আমন্ত্রণে পিতৃগৃহের অনুষ্ঠানে গেলে তার পিতা শিবের নামে নানা নিন্দা করে।পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে তৎক্ষণাৎ যজ্ঞকুণ্ডে আত্মবিসর্জন দেন সতী। তখন শিব ক্রুদ্ধ হয়ে সতীর শবদেহ স্কন্ধে নিয়ে বিশ্বধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন। তাঁকে শান্ত করতে বিশ্বপালক বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্রদিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। সতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহের টুকরোগুলি পৃথিবীর নানা স্থানে পতিত হয়েছিল। পৃথিবীতে পড়ামাত্রই এগুলি এক একটি পবিত্র সতী পীঠে পরিণত হয়।কালীঘাট মন্দির একটি অন্যতম সতীপিঠ।

  • কিংবদন্তি অনুযায়ী আত্মারাম ব্রহ্মচারী নামে এক মাতৃসাধকে দেবী স্বপ্নাদের দেন যে নীলগিরি পর্বতের ব্রহ্মানন্দ গিরির কাছে যে কোষ্ঠী পাথর আছে তা দিয়েই দেবীর মূর্তি গড়ে এখানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।আত্মারাম সেই নির্দেশ পালন করে।প্রতিষ্ঠিত হয় দেবী মন্দির।
    বর্তমানের মন্দিরটি ১৮০৯ সালে বড়িশার সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী, তাঁর পুত্র রামলাল ও ভ্রাতুষ্পুত্র লক্ষ্মীকান্তের উদ্যোগে আদিগঙ্গার তীরে নির্মিত হয়েছে। পরবর্তীকালে মন্দিরের কিছু পোড়ামাটির কাজ নষ্ট হয়ে গেলে সন্তোষ রায়চৌধুরী সেগুলি সংস্কার করেন।বর্তমান এই মন্দিরটি নব্বই ফুট উঁচু। মন্দিরের উপরে রয়েছে ৩ টি কলস , ১ টি ত্রিশূল ও ১ টি ত্রিকোণা ধাতব পতাকা যাতে ‘ॐ’ লিখিত। এটি নির্মাণ করতে আট বছর সময় লেগেছিল এবং খরচ হয়েছিল ৩০,০০০ টাকা। সামনের নাটমন্দির তৈরি করেন আনদুলের জমিদার কালীনাথ রায়।মন্দির সংলগ্ন জমিটির মোট আয়তন ১ বিঘে ১১ কাঠা ৩ ছটাক; বঙ্গীয় আটচালা স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত মূল মন্দিরটির আয়তন অবশ্য মাত্র ৮ কাঠা। গর্ভগৃহটি সুউচ্চ।

  • প্রতিদিন এই মন্দিরে দেবীকে ভোগ উৎসর্গ করা হয়।তবে কালিপুজোর দিন এখানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে।মহামারী কালের ২ বছর বাদ দিলে অনন্ত কাল ধরে এখানে সারা রাত ভক্তরা বসে পুজো দেখে ও প্রসাদ পায়।আশাকরা যায় এ বছর মহা ধুমধামের সঙ্গেই সতীপীঠ কালীঘাটে আগামী অমাবস্যায় পুজো হবে।
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!