ভূত চতুর্দশী – কেন ১৪ শাক ?
নিউজ ডেস্ক: কার্তিক মাসের অমাবস্যার আগেই দিন আর্থ চতুর্দশীর দিন ১৪ শাক খাওয়ার রীতি বহুকাল ধরে।কিন্তু কেন ১৪ শাক?কোন কোন শাক?
ফোঁটা দিয়ে এই তিথিকে উদযাপন করে থাকে। এই ১৪ শাক হল- ওল, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিলঞ্চ, জয়ন্তী, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, ভাটপাতা, কেঁউ, এবং শৌলফ। এমনিতেও এই সময়ে নানা ধরনের শাক-সবজি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল, তাই ১৪ শাক খাওয়া ভাল।
দীপান্বিতা কালী পুজোর আগের দিন অর্থাৎ চতুর্দশী এর ক্ষণ পরে গেলেই প্রতি বাড়িতে ১৪ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে বাতি দেওয়া হয়। ঘর বাড়ি উঠোন এবং সর্বত্রই ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভূত অর্থাৎ অতীত, এবং চতুর্দশী অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের ১৪ তম দিন। পিতৃ এবং মাতৃকুলের সাত পুরুষের উদ্দেশ্যে বাতি প্রদান। পুরাণ মতে, এইদিন মহাকালী ধীরে ধীরে জাগ্রত হতে শুরু করেন। অশুভ শক্তির বিনাশের পূর্বক্ষণ এই ভূত চতুর্দশী। হিসেবমত সমস্ত প্রদীপ ঘিয়ের হওয়া উচিত কিন্তু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তেলের শিখা ব্যবহার করা হয়। দীপাবলি উপলক্ষে যেমন চারিদিকে অন্ধকার ঘুঁচে গিয়ে আলোয় ভরে ওঠে তেমনই ভূত চতুর্দশী- এই বিশেষ দিনে আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের কাছে আসেন।তাই আলো জ্বালিয়ে তাঁদের আসার পথকে সুগম করতে হয়।
তবে কার্তিক মাসের অমাবস্যার পরেই হেমন্ত শীত ও বসন্তের আগমন।এই সময় বাতাসে ঘুরে বেড়ায় অজস্র ভাইরাস।ফলে জ্বর জ্বরিতে মানুষ জর্জরিত হয়।এই ১৪ শাক আসলে প্রাচীন কালের বুস্টার।মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে পূরণের একটি গল্প আছে।এক ব্রাহ্মণ এবং তাঁর স্ত্রী দুজনেই নিজেদের বাসভবন পরিষ্কার না করে দিনের পর দিন নোংরা করে রাখতেন। এবং সেখানেই নানান ভূতের আগমন ঘটতে থাকে। হঠাৎ একদিন সেই বামুনের নজরে আসে ভূতেদের শোরগোল। ব্যাস! ওমনি মাথায় হাত আর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু করলেন বাড়ির দেখভাল। নতুনভাবে সবকিছুই পরিষ্কার করলেন বটে, তেমনই ১৪ রকম গাছের পাতার সহযোগে সারা বাড়িতে গঙ্গার জল ছিটিয়ে শুদ্ধ করার প্রয়াসও করেন। সেইদিনের পর থেকেই কিন্তু ভূত চতুর্দশী উপলক্ষে ১৪ শাক খাওয়ার চল।