সুদের হার বাড়াল মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, ভারতে নতুন করে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা

0 0
Read Time:6 Minute, 25 Second

নিউজ ডেস্ক: আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজার্ভ FOMC বৈঠকের পরে তার সুদের হার ৭৫ bps বাড়িয়েছে৷ আমেরিকা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সচারচর সুদের হার বাড়ায় না। ২০১৮ সালে শেষ সুদের হার বাড়িয়েছিল। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই ধরনের সিদ্ধান্ত বিশ্বের পাশাপাশি ভারতের ওপর চাপ বাড়াবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তের জেরে ভারতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে। এই সিদ্ধান্তের জেরে ভারতের টাকার দামের পতন হতে পারে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ২০১৮ সালে শেষ সুদের হার বাড়িয়েছিল। ফেডারাল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ানোর মূল কারণ হল সমগ্র অর্থনীতিতে ক্রেডিটের পরিমাণ বাড়ানো। করোনা মহামারীর জেরে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়। বিশ্বের পাশাপাশি মার্কিন অর্থনীতি সঙ্কুচিত হতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদের হার শূন্যে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বর্তমানে ধীরে ধীরে করোনা মহামারীর প্রকোপ থেকে বেড়িয়ে আসছে বিশ্ব। অর্থনীতি সচল হয়েছে। সেই কারণে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ানোর জেরে ব্যাপক প্রভাব আমেরিকা সব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়ছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বিশ্বের সব থেকে বড় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। যার জেরে বিভিন্ন সংস্থার একই পরিমাণ ঋণ নিলেো সুদের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের থেকে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার বেড়ে যাওয়ার জেরে স্বাভাবিক নিয়মে যে কোনও জিনিসের দাম বাড়বে। মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে যাবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও কমে যাবে। অন্যদিকে, সুদের হার বাড়ানোর জেরে বিভিন্ন সংস্থার ব্যয় বাড়বে। যার ফলে কর্মী ছাঁটাইয়ের একটা সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আমেরিকার বর্তমানে অর্থনীতি বর্তমানে ভালো অবস্থানে নেই। মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের হার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সুদের হার বাড়ানোর অর্থ হল, বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি একধাপে বেশ কয়েকগুন বেড়ে যাবে।

ভারতের মতো উদীয়মান বাজারে ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ানোর প্রভাব সীমিত হতে পারে। তবে ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ানোর জেরে ভারতের অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাবের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পুঁজির ওপর প্রভাব পড়বে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগের থেকে অনেক কম অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে। যার প্রভাব সরাসরি ভারতের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর পড়তে পারে।

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ার জেরে ডলারের নিরিখে টাকার মূল্যের পতন হতে পারে। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদের হার বাড়ার জেরে ডলারের মূল্য আগের থেকে অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। টিসিএস, ইনফোসিস, এইচসিএল টেক, টেক মাহিন্দ্রার মতো ভারতীয় প্রযুক্তি সংস্থার পাশাপাশি অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো আমেরিকায় পরিষেবা দেয়। আমেরিকার গ্রাহকদের ওপর অনেকাংশে এই প্রযুক্তি সংস্থাগুলো নির্ভর করে, সেক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সুদের হারের জেরে মন্দা দেখা দিতে পারে। সংস্থাগুলো ব্যয় সঙ্কোচন করতে পারে। কর্মসংস্থানে এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাব স্টক মার্কেটে পড়তে পারে। ২০১৩ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভে সুদের হার বাড়ার ফলে বিশ্বের বাজারে স্টক মার্কেটের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। এই ঘটনাকে ‘টেপার টেনট্রাম’ বলা হয়ে থাকে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের জেরে কয়েকমাসের মধ্যে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য ডলারের নিরিখে ১৫ শতাংশ পতন হয়েছিল। পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সুদের হার বৃদ্ধি করেছি। ২০২২ সালের নভেম্বরে ফের মার্কিন ফেডারেল সুদের হার বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার বাড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!