কৌটোতে মুখ আটকে শিয়ালের ছটফটানি
নিউজ ডেস্ক::মনুষ্যেতর প্রাণীর সাথে মানুষের প্রধান পার্থক্য মস্তিষ্কের।সেই উন্নত মস্তিষ্কের সাহায্যেই মানুষ জয় করে বিশ্বব্রহ্মান্ড কিন্তু মনুষ্যেতর প্রাণী আটকে থাকে শুধু ক্ষুধা নিবারণে ও প্রজন্ম সৃষ্টিতে।যদিও প্রাণীকূলে শিয়ালকে সবচেয়ে ‘চালাক’ প্রাণী বলা হয়।তবুও কখনো কখনো শিয়ালের হয় ‘অতি চালাকের গলায় দড়ি’ অবস্থা।
ঠিক সেই রকম ঘটনায় ঘটলো জলপাইগুড়িতে।খাবারের লোভে কৌটোতে মুখ আটকে বিপদে পড়লে শিয়াল।ভর সন্ধ্যে পাশের ঘরে খটমট শব্দ শুনে চোর ভেবে তাড়াতাড়ি সেই ঘরে ঢোকে বাড়ির এক যুবক দিবাকর।গিয়ে যা দেখে তাতে চক্ষু ‘ছানাবড়া’।
যুবক দেখে একটি পূর্ণ বয়স্ক শিয়ালের মুখ আটকে গিয়েছে প্লাস্টিকের কৌটায়৷ সেটি থেকে মুখ বের করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে সে৷ কিন্তু যতই চেষ্টা করছে ততই যেন তার মুখ কৌটার ভেতরে আটকে যাচ্ছে৷ এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে যুবক।চেপে ধরে শিয়ালকে তারপর আপ্রাণ চেষ্টা চালায় শিয়ালের মুখ থেকে কৌটা বের করতে। সকলের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। জলপাইগুড়ির মোহিত নগর জোড় দিঘি এলাকার ঘটনা৷
এদিকে রাত বেড়ে চলেছে।কিছুতেই শিয়ালের মুখ থেকে কৌটো বের করা যাচ্ছে না।তখন রাত প্রায় ১১ টা।পাড়ার একজনের পরামর্শে দিবাকর খবর দেয় গ্রিন জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিবেশ প্রেমীদের কাছে।
খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেন গ্রিন জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক তথা পরিবেশ প্রেমী কর্মী অঙ্কুর দাস। বনকর্মী সৌভিক মণ্ডল সহ গ্রিন জলপাইগুড়ি টিমের সদস্যরা। অবশেষে ফের চেষ্টা শুরু৷ দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর প্লাষ্টিকের কৌটা কেটে বিপদ মুক্ত করা হয় শিয়ালকে।
দিবাকর হাসতে হাসতে সবাইকে জানায়,ভর সন্ধ্যেয় মুখে কোটা নিয়ে বাড়ির ভিতরে চলে আসে অসহায় শিয়ালটি৷ গ্রিন জলপাইগুড়ি সংস্থার সদস্যদের সহায়তায় অবশেষে ওকে বিপদমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷’’ কৌটা মুক্ত করার পর সুস্থ থাকায় শিয়ালকে ওখানেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
গ্রিন জলপাইগুড়ি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক তথা পরিবেশ প্রেমী অঙ্কুর দাস জানান, ‘‘বন বিভাগের গরুমারা ওয়াইর্ল্ড লাইফের কর্মী সৌভিক মণ্ডলের সহযোগিতায় আমরা শিয়ালটার মুখ থেকে কৌটা কেটে দিয়ে ওকে বিপদ মুক্ত করি। তবে এলাকার বাসিন্দারা সচেতন ছিলেন বলেই আমরা খবর পেলাম৷ না হলে শিয়ালটিকে বিপদমুক্ত করা সম্ভব হত না৷’’
সকলেই খুশি হয়ে ওঠে।