স্বপ্নপূরনের পথে বঙ্গবন্ধুর দেশ
নিউজ ডেস্ক, চট্টগ্রাম: চীনের সাংহাই শহরের আদলে “ওয়ান সিটি টু টাউন” গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পথে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দুই পাড় এবার সংযুক্ত হতে চলেছে। টানেলটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা তারপরেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই টানেল। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উপহার পাচ্ছে বাংলাদেশবাসী। যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গাড়িতে পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন মিনিট।
নবনির্মিত এই টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। উত্তরের টিউবটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারামুখী যান চলাচল করবে। এবং দক্ষিণের টিউবটি আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গামুখী যান চলাচল করবে। উত্তরমুখী টিউবটির নির্মাণকার্য প্রায় শেষের পথে। মূল টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। টিউবের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। টিউবের ভেতরের ব্যাস ১০.৮০ মিটার। মূল টানেলের ভিতরে মোট ৫. ৩৫ কিলোমিটার সংযোগকারী সড়ক পথ রয়েছে। নয়া এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে মোট ৯.৩৯ কিলোমিটার নতুন পথ তৈরি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দুই প্রান্তে বসছে টোল প্লাজা। শুধু যান চলাচলই নয় সড়কের দুপাশ দিয়ে থাকবে হাঁটার জায়গা। প্রয়োজনে পথচারীরা সেখানে হাঁটতে পারবে ও দাঁড়াতে পারবে। ইতিমধ্যে টানেলের ভিতরে বাতাস নির্গমন ব্যবস্থা সচল রাখা অগ্নি নির্বাপন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, কমিউনিকেশন ও মনিটরিং ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে। প্রকল্পের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পরীক্ষার পরই আগামী বছরেই বাংলাদেশবাসী পেতে চলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
অত্যাধুনিক এই টানেলে দুপাশে লাগানো হয়েছে আগুন প্রতিরোধক ফাইবারের বোর্ড। টানেলের ভিতর ছাদের দিকের অংশ আগুন প্রতিরোধ কালো রঙের ফাইবারের আস্তরণ লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কিছু দূর অন্তর অন্তর রয়েছে জরুরি প্রয়োজনে বেরোনোর পথ। এই পথের মাধ্যমে টানেলের একটি টিউব থেকে অন্য টিউবও যাওয়া যাবে। অতিমারীর কারণে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে বেশ কিছুটা দেরি হলেও প্রথম টিউবটি নির্মাণে ১৭ মাস সময় লেগেছিল পরেরটি ১০ মাসে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসনের তরফে আশা করা হচ্ছে আগামী বছরেই ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই টানেল। ঢাকার তরফে আশা প্রকাশ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান টানেলের ফলে দেশের জিডিপির বৃদ্ধির হার বাড়বে প্রায় ০.১৬৬ শতাংশ। প্রশাসনিক স্তরের এক সমীক্ষা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করবে। পরবর্তীকালে সময় যত এগোবে এই টানেল ব্যবহারকারীর সংখ্যাও আরো খানিকটা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।