দার্জিলিং-এ ক্ষমতার সমীকরণ বদল নিয়ে জল্পনা
নিউজ ডেস্ক::দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যানের আর্জি খারিজ। গত পুরসভা নির্বাচনে জয়ের পরে ক্ষমতায় এসেছে হামরো পার্টি। এদিন তাদের আর্জি খারিজ কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে। নির্দেশ বিচারপতি কৌশক চন্দের সিঙ্গল বেঞ্চের। এর ফলে বুধবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে কোনও বাধা থাকল না।
হাইকোর্টের নির্দেশের ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দার্জিলিং পৌরসভার দখল নিতে চলেছে অনিত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। গত ২৪ নভেম্বর চেয়ারম্যান-এর পদত্যাগ চেয়ে ছয় জন কাউন্সিলর মিটিং ডাকার জন্য নোটিশ পাঠায়। ১৫ দিনের মধ্যে মিটিং না হওয়ায় ১৩ ডিসেম্বর ভাইস চেয়ারম্যানকে ফের বিষয়টি জানানো হয়। সেখানেও কোনও জবাব না পাওয়ায়, তিনজন কাউন্সিলর অনাস্থার জন্য ২৮ ডিসেম্বর মিটিং ডাকেন।
বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে, অনাস্থার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে আর্জি জানান চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল ও ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াঞ্জি শেরপা। তাদের বক্তব্য, মাত্র ছয় জন কেন চিঠি লিখেছে। এব্যাপারে কেন একতৃতীয়াংশ কাউন্সিলর থাকবেন না সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। যদিও বিচারপতি কৌশক চন্দ জানিয়ে দেন, মিউনিসিপ্যালিটি অ্যাক্ট ১৯৯৫, অনুযায়ী অনাস্থা আনা হয়েছে। এখানে মিটিং না ডাকাটা চেয়ারম্যানের ব্যর্থতা। সেই কারণেই তাঁর আর্জি খারিজ করা হচ্ছে।
দার্জিলিং পুরসভায় আসন সংখ্যা ৩২। কোনও দল কিংবা গোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১৬ টি আসনের প্রয়োজন। গত পুরসভা ভোটে হামারো পার্টি ১৮ টি আসন পেয়ে দার্জিলিং পুরসভার ক্ষমতা পায়। অনিত থাপার বিজিপিএম পায় ৯ টি আসন। তৃণমূল দুটি এবং বিমল গুরুংয়ের জিজেএম পায় ৩ টি আসন। গত ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার হামারো পার্টি ছেড়ে ৫ কাউন্সিলর অনিত থাপার বিজিপিএমে যোগ দেন। এক্ষেত্রে তৃণমূল আগে থেকেই অমিত থাপাকে সমর্থন জানিয়ে রেখেছে। ফলে ইতিমধ্যেই অনিত থাপার বিজিপিএমের কাউন্সিলর সংখ্যা ১৬ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে হামারো পার্টির কাউন্সিলর সংখ্যা কমে হয়ে গিয়েছে ১৩।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দার্জিলিং পুরসভার হাতবদল সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। তবে হামারো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড অনিত থাপার বিজিপিএমের বিরুদ্ধে টাকার লোভ দেখিয়ে কাউন্সিলর ভাঙানোর অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতন্ত্রিক মোর্চার নেতা অনিত থাপা কাউন্সিলরদের টাকা ছাড়াও শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর দলের কাউন্সিলররা গরিব হতে পারেন, কিন্তু তাঁরা পাহাড়কে ভালবাসেন। অন্যদিকে, বিজিপিএম তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দল ভাঙানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।