‘আদিগঙ্গা’ সংস্কারে কেন্দ্র অনুমোদন করলো ৬৬৪ কোটি টাকা
নিউজ ডেস্ক::প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শাসনভার গ্রহণ করেই ‘নমামি গঙ্গা’ প্রকল্প গ্রহণ করেন।সেই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো গঙ্গোত্রি থেকে সাগর পর্যন্ত গঙ্গার সংস্কার ও গঙ্গার প্রবাহ পথকে বাঁধা মুক্ত করা।এবার সেই প্রকল্পের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাশে দিয়ে প্রবাহিত আদিগঙ্গা বা টালিগঙ্গার সংস্কার। সেই প্রকল্পেই কেন্দ্রীয় সরকার ৬৬৪ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। দইঘাট থেকে গড়িয়া স্টেশন। দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৭ কিলোমিটার। একদিকে জবরদখল, অন্যদিকে দূষণ। দুইয়ের জোড়া ফলায় দীর্ঘদিন ধরেই অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে টালিনালা। বহু চেষ্টা করেও পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফেরাতে পারেনি কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকার। যার ফল ভুগতে হচ্ছে আদিগঙ্গার দু’ধারের বাসিন্দাদের। এখানকার অন্যতম সমস্যা জমি জবার দখল। প্রাথমিকভাবে ৩০ মাস সময় দেওয়া হয়েছে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে।
বাংলার মধ্যযুগের ইতিহাসের সঙ্গে এই আদিগঙ্গা যুক্ত। বিভিন্ন মঙ্গল কাব্যে দেখা গেছে মধ্যযুগের বাণিজ্যতরী এই পথেই যেতো। গঙ্গা থেকে টালি নালার বা আদি গঙ্গার শুরু হয়েছে দই ঘাটে। দই ঘাট থেকে বিদ্যাধরী নদীর সংযোগস্থল পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার আদি গঙ্গার দৈর্ঘ্য। এক সময় এই পথেই বয়ে যেত নদীর মূল স্রোত। পরে পথ পরিবর্তনে প্রবাহ কমে। সেই সময় এই আদি গঙ্গার খনন কাজ করেন উইলিয়াম টালি। তার নামেই টালি নালা বলে আদি গঙ্গা পরিচিতি। কিন্তু কালের গ্রাসে ও মানুষের লোভে এই আদিগঙ্গা এখন মৃতপ্রায়।
নদীর পারেই গড়ে ওঠে খাটাল। বাসিন্দাদের ব্যবহার করা বর্জ্য জমা পড়তে থাকে এখানে। মিশতে থাকে দূষিত জল। এর পর রাজ্যের আর্থিক সহায়তা ও কর্পোরেশনের উদ্যোগে অল্প বিস্তর কাজ শুরু হয় সম্প্রতি।কিন্তু তা উল্লেখযোগ্য নয়।
কোলকাতা পুরসভা ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই আদিগঙ্গা সংস্কারের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি প্রাথমিক রিপোর্টে ৯৩৪ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের অধীন নমামি গঙ্গে আওতাভুক্ত করানোর জন্য পাঠানো হয়। চলতি মাসে গত ২৩ ডিসেম্বর ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার ৪৬ তম কার্যনির্বাহী বৈঠকে এই কাজে ৬৬৪ কোটি টাকা অনুমোদন করে।