পুজো দেওয়া-প্রসাদ নিষিদ্ধ করে মহিষাদলে পল্লি কমিটির ফতোয়া ঘিরে বিতর্ক!
নিউজ ডেস্ক::গ্রামের মন্দিরে পুজো দেওয়া থেকে প্রসাদ বিতরণ, সবেতেই বঞ্চিত করার ফতোয়া দেওয়া নিয়ে বিতর্ক। গ্রাম কমিটির তরফে গাছে পোস্টার সেঁটে সিদ্ধান্ত জানানো হয়। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রঙ্গিবসানের এই ঘটনায় শাসক তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। যদিও তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। শাসকদলের অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা সভা করার পর থেকে এলাকা উত্তপ্ত করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
মহিষাদলের রঙ্গিবসান উত্তর পল্লি কমিটির তরফে গ্রামবাসীদের নির্দেশের কথা জানিয়ে বলা হয়েছে গুরুপদ বাড়ুই এবং স্বরূপ ঘোড়ুইয়ের পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, এই দুই পরিবারের কেউ গ্রামের মন্দিরে পুজো দিতে কিংবা প্রসাদ নিতে পারবেন না। এরপরেও যদি গ্রামের কোনও পরিবার এই দুই পরিবারের কাউকে পুজোর প্রসাদ বিতরণ করেন কিংবা পুজোয় নিমন্ত্রণ করেন, তাহলে সেই পরিবারকে জরিমান করা হবে কিংবা বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রবিবার গ্রামে এই পোস্টার সকলের নজরে আসে। তারপরেই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। জানা গিয়েছে, পল্লি কমিটির সবাই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত।
বয়কট করা নিয়ে স্বরূপ ঘোড়ুইয়ের পরিবার জানিয়েছে, শুধু এখন নয় গত ৮ বছর ধরে তাঁদেরকে বয়কট করা হয়েছে। ওই পরিবার জানিয়েছে, জমি নিয়ে গ্রামের মোড়লদের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ। তাঁদের চাষের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তারা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। সেই কারণেই এই পরিস্থিতি বলে জানিয়েছে ওই পরিবার। তবে রবিবার দেওয়া পোস্টারের তাঁদের অসম্মান করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ওই গুরুপদ বারুইয়ের পরিবার।
এই ঘটনায় বিজেপির তরফে শাস্তির দাবি করা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, বিজেপি করার দায়ে মধ্যযুগীয় নিদানে দুটি পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। এর আগে মহিষাদলে একাধিক পরিবারের বিরুদ্ধে এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের দিন যত এগিয়ে আসবে, ততই এই ধরনের পোস্টার নজরে আসবে। তাঁর প্রশ্ন, যদি আট বছর ধরে বয়কট হয়ে থাকে তারপরে ঠিক এখন কেন এই ধরনের পোস্টার পড়ল? পোস্টারের বিষয়টি তিনি পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন।