ত্রিপুরায় এবার সরকারের ‘চাবি’ তিপ্রা মোথার হাতে!
নিউজ ডেস্ক::ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের একমাসও বাকি নেই। রাজনৈতিক দলগুলি নিজেজের মধ্যে জোট প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেখানে বিজেপির বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসছে সিপিএম-কংগ্রেসের জোট। ইতিমধ্যেই তারা বিভিন্ন মহকুমায় একইসঙ্গে মিছিল-সভা সমাবেশ শুরু করে গিয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে সরকার গঠনের চাবি প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্যের তিপ্রা মোথার হাতে চলে যেতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশ।
ত্রিপুরায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদলটা শুরু হয়েছে গত এপ্রিল থেকে। সে সময় স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচনে ২৮ টি আসনের মধ্যে ১৮ টি আসনে জয়লাভ করে তিপ্রা মোথা। তারপর থেকেই বাংলাদেশ ঘেরা এই রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের বদল হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এই দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কথা জানতে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিজেপির কথাও হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কিছু ঘোষণা হয়নি।
স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও ত্রিপুরায় উপজাতিদের সমস্যার সমাধান হয়নি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের সব উপজাতি বসবাসের এলাকা নিয়ে বৃহত্তর তিপ্রাল্যান্ড গঠনের দাবি তুলেছেন প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য। এই দাবি মধ্যে অসমের কিছু অংশ যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশ রয়েছে। বৃহত্তর তিপ্রাল্যান্ড গঠনের দাবিতে উপজাতি এলাকায় ভিড় বাড়ছে তাঁর কর্মসূচিতে। স্বশাসিত জেলা পরিষদে জয়ের পরে জাত-মান খুইয়েছে রাজ্য সরকারে বিজেপির অংশীদার হিসেবে পরিচিত আইপিএফটি। যার জেরে ভোটের আগে এরা তিপ্রা মোথার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে, এমন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। রাজ্যে ভোটের দিন ঘোষণার পরে দুই উপজাতি দলের মধ্যে বৈঠক হলেও, এব্যাপারে প্রকাশ্যে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়নি।
প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের বসবাস ত্রিপুরায়। এর একতৃতীয়াংশ হলেন উপজাতি। রাজ্য বিধানসভায় ৬০ টি আসনের মধ্যে ২০ টি আসন উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়াও পাঁচ-ছটি এমন আসন রয়েছে যেখানে উপজাতি ভোটের প্রভাব রয়েছে। প্রাথমিকভাবে অন্তত ৪৫ টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছে তিপ্রা মোথা।
তবে বৃহত্তর তিপ্রাল্যান্ড গঠনের দাবির পাশে নেই মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলি। তবে ভোটের পরে সরকারের গঠনের সময় বিষয়টি সমস্যা তৈরি করতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। কারণ তিপ্রামোথা বলেছে, যারা তাদের আলাদা রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করবে, তাদের পাশে থাকবে তারা।
একদিকে যখন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস টিকে থাকার লড়াই শুরু করেছে, অন্যদিকে বিজেপির লক্ষ্য হল ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াই। উভয়ের ক্ষেত্রেই উপজাতি ভোট যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ।