রাজ্যপালের হাতেখড়ি ইস্যুতে নিশানা তৃণমূলের মুখপত্রে

0 0
Read Time:6 Minute, 5 Second

নিউজ ডেস্ক::রাজভবনে সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়ি দিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তা নিয়ে রাজনৈচতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির। বিজেপি এই হাতেখড়িকে রাডনৈতিক স্টান্ট বলে অভিযোগ করে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আর তার পাল্টা তৃণমূলের মুখপত্রে নিশানা করা হয়েছে বিজেপিকে।

বিজেপির এই অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলায়’ তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তোপ দেগেছেন, বিজেপি বাংলার শত্রু, বাংলা ভাষার শত্রু। রাজ্যপাল বাংলা ভাষাকে ভালোবাসছেন দেখে ওদের গায়ের জ্বালা হচ্ছে। বাংলা ভাষার ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রাজ্যপাল যদি বাংলা শিখতে চান, তাঁকে তো উৎসাহিত করা উচিত।

কুণাল বলেন, বিজেপি তা না করে রাজ্যপালের বাংলা শেখার বিরোধিতা করছে। ওরা বাংলা তথা বাঙালির কলঙ্ক। রাজভবন তথা রাজ্যপালের উপর চাপ বাড়াতে বঙ্গ বিজেপিকে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এমন নির্লজ্জ আক্রমণ করাচ্ছে। তিনি বলেন, ওরা ভয় দেখাচ্ছে, বিজেপির একাংশকে দিয়ে চাপ তৈরির করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, আসলে বিজেপি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে জগদীপ ধনখড়ের মতো পার্টির লোকের মতো আচরণ করা রাজ্যপালের ভূমিকা দেখে। ওরা চাইছে রাজভবন ফের বিজেপির পার্টি অফিস হয়ে যাক। এখন পর্যন্ত রাজ্যপাল নিরপেক্ষ আছেন, তাই ওদের গাত্রদাহ। বিজেপিতে যাঁরা সুস্থ সংস্কৃতি ও ভাবনার পথে আছেন তাঁদের উচিত স্বপন দাশগুপ্তের বিবৃতির বিরোধিতা করা।

সম্প্রতি বাংলা ভাষা শেখার আগ্হ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাই তিনি রাজভবনে সরস্বতী পুজো করে হাতেখড়ি দেওয়ার কথার বলেন। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্যোরেপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই তিনি হাতেখড়ি দেবেন। আর এই বিষয়কেই সামনে এনে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত।

স্বপনবাবু বলেন, রাজভবনে এভাবে হাতেখড়ির অনুষ্ঠান দেখে আমার যেমন কেমন কেমন লাগছে। রাজ্যপালের এই হাতেখড়ি দিয়ে বাংলা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশকে রাজনৈতিক স্টান্ট বলে অভিহিত করেছেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি এ বিষয়ে রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের জেরক্স মেশিন বলেও কটাক্ষ করেছেন।

এতদিন দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল ও বিজেপির সখ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসেছে তৃণমূল। জগদীপ ধনখড়ের সময়ে রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিস ও রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপা্ত্র বলতেও কুণ্ঠা করেনি তারা। এবার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল বিষয়টি। এবার বিজেপি তির ছুড়ল রাজ্য সরকার ও রাজভবনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে।

সম্প্রতি রাজ্য-রাজভবন ঘনিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যপালকে বিঁধেছেন স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, আপনি এত ঘনিষ্ঠতা দেখাচ্ছেন যে রাজভবন ও তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসটা যে আলাদা, সেই তফাতটা কি মাঝে মাঝে চলে যাচ্ছে। রাজ্যপালকে সরাসরি রাজ্য সরকারের জেরক্স মেশিন বলতেও পিছপা হননি স্বপনবাবু।

প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাতের জমানা শেষ। বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সুসম্পর্কের বাতাবরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজ্য ও রাজ্যপালের এই পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্পর্ক নিয়ে আদৌ খুশি নয় বিজেপি। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত বলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর একটি সম্পর্ক থাকা উচিত। পাশাপাশি সাংবিধানিক প্রধানের একটি নিরপেক্ষতাও থাকা উচিত।

রাজ্যপাল বাংলা শিখতে চাইছেন, সেখানে এত আপত্তি কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি নেতা বলেন, একজন বয়স্ক মানুষ বাংলা শিখছেন তা খুবই ভালো কথা। কিন্তু এটার মধ্যে একটা রাজনৈতিক স্টান্ট রয়েছে। রাজনৈতিক স্টান্টের মধ্যে একজন রাজ্যপালের পড়া উচিত নয়। তৃণমূল পাল্টা তাঁদের মুখপত্রে এ বিষয়ে বিজেপির সমালোচনা করেছে। বিজেপি অন্তঃসারশূন্য আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!