রাজ্যপালের হাতেখড়ি ইস্যুতে বিজেপিতেই বিভাজন
নিউজ ডেস্ক::রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বাংলা শেখার আগ্রহ প্রকাশ ও হাতেখড়ি দেওয়া নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতার অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুভাষ সরকার সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করলেন এ ব্যাপারে।
রাজ্যপালকে নিয়ে বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে একেবারে উল্টো মতামত ব্যক্ত করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু এ প্রসঙ্গে বলেছেন, রাজভবনের দিকে চেয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
দিলীপ ঘোষের সাফ কথা, রাজভবন কীভাবে চলছে, রাজ্যপালের ভূমিকা কেমন, এসব দেখা আমার কাছ নয়। আমি কোনওদিন রাজভবনের দিকে চেয়ে রাজনীতি করিনি, করবও না। বাকিদেরও বলব, রাজভবন নির্ভরতা কমান। সেটাই রাজনীতি পক্ষে ভালো।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সম্প্রতি স্বপন দাশগুপ্ত যে বাক্যবাণ হেনেছেন সে প্রসঙ্গ এড়িয়েই দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজভবন সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকা বাঞ্ছনীয়। রাজ্যপাল কে হল, তার উপর যদি কেউ কমফোর্ট বা আনকমফোর্ট ফিল করে,ত তাহলে তার রীজনীতি ঢিলে হয়ে যাবে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজনীতিকে তার নিজস্ব জায়গায় রাখতে হবে। সরকারের ভুল ধরতে হবে। লড়াইটা সরকারের সঙ্গে হবে। রাজ্যপালের সঙ্গ সরকার বা বিরোধী কারও সংঘাত বাঞ্ছনীয় নয়। সে সরকার হোক বা বিরোধী হোক। রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদ, সেখানে যিনি বসেন তিনি যোগ্য ব্যক্তি। কারও দাবি থাকতে পারে, তা জানানো উচিত।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, স্বপনবাবুর কথা আমি শুনিনি, বলকে পারব না। ওগুলো দেখার জন্য দিল্লিতে লোক আছেন। ওখানে আমরা সরকারি পার্টি। রাজ্যপালকে যাঁরা দিল্লি থেকে এখানে পাঠিয়েছেন, তাঁরা দেখে নেবেন। আমার মনে হয় না এই পদ নিয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি করা উচিত। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুভাষ সরকারও বলেন, রাজ্যপাল বাংলা শিখতে চেয়ে হাতেখড়ি দেবেন। এ বিষয়টি তো উৎসাহ দেওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজভবনে সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়ি দিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। বিজেপি এই হাতেখড়িকে রাজনৈতিক স্টান্ট বলে অভিযোগ করে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত।
এ বিষয়ে রাজ্যপালকে রাজ্য সরকারের জেরক্স মেশিন বলে কটাক্ষ করেন স্বপনবাবু। তিনি বলেন, রাজভবনে এভাবে হাতেখড়ির অনুষ্ঠান দেখে আমার যেমন কেমন কেমন লাগছে। রাজ্যপালের এই হাতেখড়ি দিয়ে বাংলা শেখার ইচ্ছাপ্রকাশকে রাজনৈতিক স্টান্ট বলে অভিহিত করেছেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত।
রাজ্য সরকার ও রাজভবনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেও ছাড়েননি তিনি। এতদিন দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল ও বিজেপির সখ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসেছে তৃণমূল। জগদীপ ধনখড়ের সময়ে রাজভবনকে বিজেপির পার্টি অফিস ও রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপা্ত্র বলতেও কুণ্ঠা করেনি তারা। এবার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল বিষয়টি। এবার বিজেপি তির ছুড়ল রাজ্য সরকার ও রাজভবনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে।