‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ – ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

0 0
Read Time:3 Minute, 24 Second

নিউজ ডেস্কঃ শুধু মাতৃ ভাষার সম্মান রক্ষার্থে জীবনদান পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। এমন বিরল নজির সৃষ্টির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত আমাদের মাতৃভাষা ‘বাংলা’ । আসল কথা যেকোনো মাতৃভাষাই সেই মানুষের ভাব-প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শাসক সব সময় তা বোঝে না। আর সেই শাসক যদি হয় পাকিস্থানের মতো অত্যাচারী, তাহলে বিদ্রোহ অবধারিত।

তারই পরিণামে আমরা হারিয়েছি আমাদের ঘরের ছেলে রফিক, সালাম, বরকত ও আব্দুল জব্বারদের। ভারতকে খন্ডিত করে ব্রিটিশ শক্তি ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্থানের জন্ম দেয়। পাকিস্থান আবার দু’ভাগে বিভক্ত – পশ্চিম পাকিস্থান ও পূর্ব পাকিস্থান। এখন থেকেই শুরু হয় ভাষাগত অত্যাচার।


পশ্চিম পাকিস্তানে উর্দু প্রধান ভাষা হলেও পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে হল বাংলা। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান সরকার উর্দু ঘেষা, তাই পূর্ব পাকিস্তানের উপর শুরু থেকেই রুষ্ট। বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে হবে— এই দাবি থেকে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।

১৯৫২ সলের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনরত ছাত্র ও সমাজ কর্মীদের উপর বর্বর পুলিশ গুলিবর্ষণ করলে রফিক, সালাম, আব্দুল জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত-সহ অনেক ছাত্র-যুব হতাহত হয়। তৈরি হলো অত্যাচারী পৃথিবীর মধ্যে এক নতুন পৃথিবী – শুধু মাতৃ ভাষার সম্মান রক্ষার্থে যেখানে রক্ত ঝড়ালো বহু মানুষ। এর পরে পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলন ও অবশেষে মুজিবর রহমানের নেতৃত্ব স্বাধীন হলো পূর্ব-পাকিস্তান – নতুন দেশের জন্ম হলো ‘বাংলাদেশ’।

মাতৃভাষার জন্য ওই লড়াইয়ের স্বীকৃতি দিলো সারা পৃথিবী। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। ১৮৮টি দেশ এই বিষয়টিকে সমর্থন জানালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গৃহীত হয়।

২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫তম অধিবেশনে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার অনুমোদন দেয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার সঙ্গে যুক্ত আছে আমাদের মাতৃভাষা ‘বাংলা’ – তাই আমরা গর্বিত।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!