” আমার নাম যদি কোনো জায়গায় যোগ থাকে, শহীদ মিনার মঞ্চে মৃত্যু বরণ করবো” – অভিষেক ব্যানার্জী
নিউজ ডেস্ক::বহু প্রতীক্ষিত ২৯ মার্চ,শহীদ মিনার মঞ্চ। সঠিক সময়ে অভিষেক ব্যানার্জী মঞ্চে এসে উপস্থিত হন। তখন দর্শক আসন কানায় কানায় পূর্ণ। অভিষেক মাইক ধরার সঙ্গে সঙ্গে করতালিতে ফেটে পড়ে শহীদ মিনার। অভিষেক প্রথম থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। তিনি শুরুতেই আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির উদ্দেশ্যে। তিনি মঞ্চে বলেন,”ভেবেছিলাম শহিদ মঞ্চে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসব। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে বাধ্যবাধকতা আছে। আজ ট্রেলার দেখালাম, আগামীতে দিল্লিতে আন্দোলন করব। গণতন্ত্রে শেষ কথা মানুষ বলে। কোর্ট বলে না। যে বিষয় নিয়ে আমরা আজ সভা করছি প্রতিটা বিষয় কেন্দ্রের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনব। কেন্দ্রীয় সরকার দুটো লাড্ডু তুলে দিয়েছে বাংলার মানুষের হাতে।” অভিষেকের বক্তব্যের আগে যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে সায়নী ঘোষের বক্তব্যেও ছিল বেশ ঝাঁঝ।
অভিষেক প্রথম থেকেই সুর চড়ান দুর্নীতি প্রসঙ্গে। এ কথা বলতে তিনি ভোলেন নি যে বিজেপি করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে না। দুর্নীতি প্রসঙ্গেও এদিন বিজেপিকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। বলেন, ”বিশ্বজিৎ কুণ্ডু কালনার প্রাক্তন বিধায়ক, যখন জানতে পারল দল টিকিট দেবে না, চলে গেল বিজেপিতে। নিজে থেকে বলেছে ৩ জনকে পরিবারের চাকরি দিয়েছে। বহাল তবিয়তে আছে, ক্ষমতা থাকলে শুভেন্দু অধিকারী, হিমন্ত বিশ্বশর্মা, বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকে বহিষ্কার করে দেখান।” অভিষেক বলেন,সারদা থেকে নারদা,নারদা থেকে কয়লা – সব ব্যাপারে তদন্ত হোক,কিন্তু সকলের জন্য আইন হোক সমান। আমাদের জন্য এক রকম আর বিজেপির নেতাদের জন্য আরেক রকম তা হতে পারে না। তার পরেই তিনি বলেন,আমার বিরুদ্ধে অনেক কুৎসা ওরা করছে। কিন্তু সকলের সামনে আমি বলে যাচ্ছি, “আমার নাম যদি কোনো জায়গায় যোগ থাকে শহিদ মিনার মঞ্চে মৃত্যুবরণ করবে। তৃণমূল একমাত্র দল অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেয়। মিথ্যে মামলা যদি দেয়, এক ডাকে অভিষেক ফোন নম্বরে কল করবেন।
একজন তৃণমূল সদস্যের গায়ে হাত পড়লে ছেড়ে কথা বলব না।” এর পরেই অভিষেক বলেন, রাহুল গান্ধী আড়াই বছর আগে একটি জনসভায় যা বলেছিলেন, তা আমি সমর্থন করি না। কিন্তু তাই বলে ২ বছর জেল ও সঙ্গে সঙ্গে সাংসদপদ বাতিল তা হতে পারে না। তিনি বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলায় ভোট প্রচারে এসে ‘দিদি ও দিদি’! বলে যখন মহিলা সম্প্রদায়কে অপমান করল, তাঁর পদের কী হবে? সুরাট কোর্টের জাজমেন্ট ও বি সি সম্প্রদায়ের আঘাত হয়েছে বলে যদি রাহুল গান্ধির সদস্য পদ খারিজ হয় তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর হবে না কেন?”
এই সভায় তৃণমূল কর্মীদের জন্য তিনি স্পষ্ট বলেন, মানুষের কাছে যান, তাদের সঙ্গে বুক চিতিয়ে কথা বলুন।
তিনি বলেন, “দলের কেউ কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।” তার পরেই দলের কর্মীদের সাবধান করে বলেন, অনেক প্ররোচনা আসবে,কিন্তু কোনো প্ররোচনায় পা দেবেন না।” সমবেত করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে শহীদ মিনার। অভিষেক ব্যানার্জী ওখান থেকে চলে যান,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা মঞ্চে।