নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই ‘ব্রাত্য’ মন্ত্রী স্বয়ং!
নিউজ ডেস্ক::পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলে বেসুরো স্বয়ং মন্ত্রী। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই বিধায়ক তথা মন্ত্রীকে না জানিয়েই পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন রাস্তা উদ্বোধন করায় বিপত্তি বাধল। এই ঘটনায় যথেষ্টই অপমানিত এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি।
শিবপুরের বিধায়ক রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। তাঁকে না জানিয়েই পুর প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারপার্সন শিবপুরে রাস্তা উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে শনিবার রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী তথা হাওড়ার শিবপুর কেন্দ্রের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারি এক সাংবাদিক বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেন।
মনোজ বলেন, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের লালবাবা ক্লাবের কাছে একটা রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল পুরসভার কাছে। সেই রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। কিন্ত শুক্রবার আমি খবর পাই ওই রাস্তা পুর প্রশাসককে দিয়ে উদ্বোধন করা হবে। এই খবর পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পুর প্রধানকে বিষয়টি জানাই।
মনোজ তিওয়ারি বলেন, তৃণমূলের কোনো নেতৃস্থানীয় কেউ নন, আবার এলাকার বাসিন্দাও নয়, এমন কেউ এই উদ্বোধনের নেপথ্যে ছিলেন বলে আমি জানতে পারি। বিধায়ক হিসেবে আমাকেও কিছু জানানো হয়নি। শনিবার আবার খবর আসে উনি প্রায় ১০০ জন মানুষকে নিয়ে সেখানে পৌঁছান।
তাঁর অভিযোগ, জানানোর পরও পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী ওই অসম্পূর্ণ রাস্তা উদ্বোধন করেন। এই খবর জানার পর খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি অপমানিত বোধ করেছি। আশা করছি এই সমস্যার সমাধান হবে। অনেক কথা শুনেছি। সেখানে যাব। দেখি কে কী করে।
তিনি বলেন, আমার বিধানসভা এলাকায় যা সমস্যা সেই সমস্যা আমি সমাধান করি। এলাকার মানুষদের সমস্ত উন্নয়নের কাজ পৌঁছে দিই। এরপরেও যদি এমন ঘটনা হয় তাহলে খারাপ লাগে। ৯৫ শতাংশ নেতৃত্ব আমার সঙ্গে আছেন। কিছু নেতা আছেন তাঁরা এই বদমায়েশি করছেন। আশা করি, আমাদের দল খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।
মনোজ তিওয়ারি বলেন, পুরো বিষয়টি দলের নেতৃত্বকেও জানিয়েছি। ফ্লেক্স ছেঁড়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে এটা মিথ্যা কথা। আর যে বলেছে সেও মিথ্যাবাদী। একটাও ফ্লেক্স কেউ ছেঁড়েনি। ফ্লেক্স নামিয়ে নিয়েছে। পুরনিগমের বোর্ড না থাকলেও রাস্তা উদ্বোধন করতে পারে। কিন্তু তা একটা নিয়ম মেনে তো উদ্বোধন করতে হবে।
মনোজের কথায়, এই রাস্তার প্রস্তাব আমার কাছ থেকেই গিয়েছে। তাছাড়া যাঁদের সেখানে নিয়ে গিয়েছিল তাঁরা এই এলাকার লোকই নয়। ওনাদের দায়িত্ব ছিল আমাকে জানানো। প্রসঙ্গত, জগাছার ধাড়সা গভর্মেন্ট কলোনি এলাকায় একটি পুরানো রাস্তা নতুন করে সংস্কার করা হয় হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে।
শুক্রবার বিকেলে ওই রাস্তাটির উদ্বোধন করার কথা ছিল পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডা: সুজয় চক্রবর্তীর। অভিযোগ, এলাকার কিছু মানুষ প্রথমে তাতে বাধা দেয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজনকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ছিঁড়ে দেওয়া হয় ব্যানার। বন্ধ করে দেওয়া হয় মাইক।
ওইদিন উদ্বোধন না করেই ফিরে যান পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন। তবে ওই অঞ্চলের কিছু মানুষের অভিযোগ তাদেরকে অন্ধকারে রেখে শুক্রবার রাস্তার উদ্বোধন করা হচ্ছিল। বিধায়ককেও জানানো হয়নি রাস্তা উদ্বোধনের কথা। তাই তারা প্রথমে ওই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
তবে, শুক্রবার ফিরে গেলেও শনিবার সকালে ওই রাস্তা উদ্বোধন করেন ডা: সুজয় চক্রবর্তী। সুজয়বাবু জানান, কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছিল। সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে ভেবেই উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তা তৈরি করেছে পুরসভা।