কালীঘাটের কাকু কি নিজের জালে নিজেই ফাঁসলেন ?
নিউজ ডেস্ক : নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে গেছে তদন্তকারী দল। ইডির শেষ সাফল্য কালীঘাটের কাকু নামে খ্যাত সুজয় ভদ্রের গ্রেফতার। দীর্ঘ ১১ ঘন্টা ম্যারাথন জেরার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু কেন গ্রেফতার? ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০ মে বাড়ি সহ ১৬ জায়গায় ম্যারাথন তল্লাশিতে একাধিক এমন নথি মেলে, যা কাকুর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকা ৩ কোম্পানির মাধ্যমে আর্থিক তছরুপের প্রমাণ দেয়। এরপর সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের তৃতীয় মোবাইল ফোন ইডি বাজেয়াপ্ত করে। তার আগে সিবিআই ২টি ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল। ৩টি ফোনে প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে ইডি এই ৩ কোম্পানি, যাদের নাম ওয়েলথ উইজার্ড প্রাইভেট লিমিটেড, আর্কাইভ কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড এবং নয়নিকা এন্ট্রারপ্রাইজ-এর একাধিক বড় স্তরের কর্মীর সঙ্গে কথা বলে এবং নথি তৈরি করতে থাকে। এই নথিগুলি মঙ্গলাবার প্রশ্ন আকারে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র-র সামনে রাখা হয়। প্রথমে বিভ্রান্তিকর ও ভুল উত্তর, এবং পরে বিকেলের দিকে উত্তর এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন ‘কালিঘাটের কাকু’। শেষে মেজাজ হারিয়ে চিৎকার করাই সুজয়কে গ্রেফতারের অন্যতম কারণ।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালীঘাটের কাকুকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার তাঁকে সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি উত্তর দেননি। কুন্তল ঘোষের কাছে থেকে টাকা নিয়ে, সেই টাকা কোথায় পাঠাতেন? কার নির্দেশে চাকরি দুর্নীতির এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা নিতেন তিনি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি ‘কালিঘাটের কাকু’। বিগত কয়েক বছরে তার সম্পত্তির বৃদ্ধির উপরেও নজর রয়েছে ইডি-র। সেই বিষয়ে অসহযোগিতার অভিযোগ কাকুর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও দেড় হাজার পাতার নথি, ও ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং তথ্য পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডি-র। সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কোনও সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন কালীঘাটের কাকু।
হওয়া আর এক তৃণমূল নেতার মোবাইল ফোন অন করা হয়। সেখান দেখা যায়, সেই তৃণমূল নেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হয়েছে কালীঘাটের কাকুর। সেখানে সেই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। আজ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে আদালতে পেশ করা হবে।