ট্রাম্প জেতায় কি বাংলাদেশের নতুন সরকারের সমস্যা বাড়বে?

নিউজ ডেস্ক ::আন্তর্জাতিক মহলে ইতিমধ্যে এই নিয়ে গুঞ্জন তৈরী হয়েছে। এর পিছনে একাধিক কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হলো, হাসিনা সরকারের পতনের পরে হাসিনা প্রকাশ্যেই বলেছিলেন যে তার সরকারের পতনের পিছনে মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা আছে। মার্কিন প্রশাসন বলতে যে তিনি জো বাইডেনকে বুঝিয়েছিলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এবার অংকটা বেশ পরিষ্কার যে, বাইডেন হাসিনা বিরোধী, তাহলে ট্রাম্প হবেন হাসিনার পক্ষে অর্থাৎ ইউনিস বিরোধী। এ তো গেলো একটা ফেলাসি। কিন্তু এর বাইরেও একটা কথা মনে রাখতে হবে যে হাসিনা পরবর্তী সময় যখন বাংলাদেশে প্রবলভাবে হিন্দু বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এবং সাম্প্রতিককালে যখন বাংলাদেশে ভীষণভাবে হিন্দুরা অত্যাচারিত হচ্ছে তখন কমলা হ্যারিস তা নিয়ে একটি বাক্য উচ্চারণ না করলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার এখনই বন্ধ করতে হবে। আর সেই কাজে যে ইউনুস সরকার ব্যর্থ তা প্রমাণিত। গত মঙ্গল ও বুধবারও চট্টগ্রামে হিন্দুদের উপর সে দেশের সংখ্যাগুরুদের একটা অংশ অত্যাচার করেছে।

এর আগেই এশিয়া বিষয়ক এক আলোচনা সভায় ট্রাম্প যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তাতে বাংলাদেশের সঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই যুক্তরাষ্ট্রের ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং লেখক মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, কমালা হ্যারিস জয়ী হলে বর্তমান সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ও সামঞ্জস্য বজায় থাকবে, কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দু’দেশের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান সম্পর্কের কাঠামোকে সমর্থন করবেন। যেখানে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে উন্নয়ন, সংস্কার ও অন্যান্য সহায়তা বা সমর্থন করছে। ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রদানের উপর জোর দেয়ার মত সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী হবে না।’

আবার আমেরিকা বিশ্বজুরে যে মানবিক সহায়তা করে আসছে, তা যে ট্রাম্প বন্ধ করে দেবেন, সেই ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন। এটাই মনে করেন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য অনিশ্চয়তার জায়গা হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে দেখছেন তিনি। কারণ জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য যে সহায়তা আসে, তার একটা বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেটা বন্ধ হয়ে গেল যথেষ্ট প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। আরেকটি বিষয় এখানে চলে এসেছে যে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনের রাশ পাকিস্তান পন্থীদের হাতে চলে যাওয়ায় সেই কোটা বিরোধী আন্দোলেন আসলে ভারতবিরোধী ও হিন্দুবিরোধী আন্দোলনে পরিনত হয়েছিল। এই বিষয়ের সমর্থন পাওয়া যায় তসলিমা নাসরিনের একাধিক বিবৃতিতে। আর জানা যাচ্ছে,এই নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। ট্রাম্প নিশ্চই বাংলাদেশের থেকে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ার বিষয়কে প্রাধান্য দেবে। তাই সবটা বিবেচনা করে মনে হয়, ট্রাম্প বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কোনো নিবিড় সম্পর্ক তৈরী করবে না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইউনুস সরকারের বিরোধিতাও করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *