নিউজ ডেস্ক ::ইদ উপলক্ষে ৩১ মার্চ জাতীয় ছুটির দিন হলেও, কলকাতা পুরসভার দু’টি দফতর খোলা রাখার সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার কমিশনার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, ওই দিন পুরসভার ট্রেজারি এবং অ্যাসেসর-কালেক্টর (সাউথ) বিভাগ খোলা থাকবে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে শুরু করেছে এবং প্রশ্ন তুলেছে, কেন জাতীয় ছুটির দিনে পুরকর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে?
বিরোধীদের অভিযোগ, এর আগেও পুরসভার স্কুলগুলির বিশ্বকর্মা পুজোর ছুটি কমিয়ে ইদের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার আবার ইদের দিনই পুরসভার নির্দিষ্ট দফতর খোলা রাখার বিজ্ঞপ্তি জারি করায় নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য এই সিদ্ধান্তের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, “পুরসভা শহরের জরুরি পরিষেবা প্রদান করে। কোভিডের সময়ও পুরকর্মীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন। শহরবাসীর স্বার্থে কোনও কোনও ছুটির দিনেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা চালু রাখা হয়। ৩১ মার্চ আর্থিক বছরের শেষ দিন, ফলে অনেকেই ওই দিন করের টাকা জমা দিতে চান। তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই ট্রেজারি অফিস খোলা রাখা হচ্ছে।”
শহরের ২০টি ট্রেজারি অফিসে প্রায় ১০০ জন কর্মী কাজ করেন। মেয়র জানিয়েছেন, “এই সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ন্যূনতম সংখ্যক কর্মী নিয়েই এই দফতর দুটি চলবে এবং বিভাগীয় প্রধানরা কর্মীদের সাথে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তবে কলকাতা পুরসভার কর্মী সংগঠনগুলির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বাম প্রভাবিত ক্লার্কস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতা পুরসভার কর্মীরা পুর পরিষেবার জন্য নিবেদিত প্রাণ। কিন্তু পুর প্রশাসন কখনও তাঁদের স্বার্থের কথা ভাবে না। জাতীয় ছুটির দিনে দু’টি দফতর চালু রাখার সিদ্ধান্ত কর্মীদের প্রতি অবজ্ঞার পরিচায়ক।”
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র ৩১ মার্চই নয়, রাজ্য সরকারের ছুটির দিন ২৭ মার্চেও এই দুই দফতর খোলা থাকবে বলে কমিশনারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে আরও বেশি অসন্তোষ ছড়িয়েছে পুরকর্মীদের মধ্যে। তাঁদের দাবি, আর্থিক বছরের শেষের দিন কর জমার জন্য দফতর খোলা রাখার প্রয়োজন থাকলেও, সেটির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা যেতে পারত।
এই বিতর্কের মধ্যে কলকাতা পুরসভা স্পষ্ট জানিয়েছে, শহরবাসীর স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, পুরকর্মীদের দাবিও উপেক্ষা করা যায় না বলে মত দিয়েছেন অনেকে। ফলে, শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কিনা, বা প্রশাসন কোনও পরিবর্তন আনে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
