মানবাজারের কবিতা মুর্মু উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬৯ নম্বর পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে

নিউজ ডেস্ক ::শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবেশের একটা বড়ো ভূমিকা আছে, তা সবাই স্বীকার করে। কিন্তু কখনো কখনো মনের ইচ্ছার কাছে হার মানে সেই পরিবেশ। তার জ্বলন্ত উদাহরণ পুরুলিয়ার মানবাজারের কবিতা। তাঁর পরিবার, স্কুলের শিক্ষকরা, গ্রামবাসী কেউই আশা করেননি কবিতা মুর্মু উচ্চমাধ্যমিকে ৯৩.৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করবেন। কী করেই বা আশা করবেন। মানবাজার-২ ব্লকের ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা জাগদা গ্রাম, যেখানে কবিতাদের বাড়ি, সেই গ্রামে এখনও সেভাবে শিক্ষার আলো ঢোকেনি। কবিতার বাবা মনসারাম বছরের বেশিরভাগ সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। বছরে দু’-এক মাস গ্রামে চাষাবাদের কাজ করেন। কবিতার মা সুমিতাদেবীও চাষের মরশুম বাদ দিলে বাকি সময়ে দিনমজুরি করেন। কিন্তু রুখাশুখা এলাকায় তেমন কাজ জোটে না। আর সেখানেই উজ্জ্বল জ্যোতিস্ক হয়ে উঠলো কবিতা।

কবিতা কখনও জঙ্গল থেকে কাঠ কুড়িয়ে, কখনও ধান পুঁতে মাকে সাহায্য করেন। সেই মেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ৪৬৯ নম্বর পেয়ে সকলকে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বরাবাজারের জিলিং স্কুল থেকে এবারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন কবিতা। গ্রাম থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। সাইকেলে ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে স্কুলে যেতে হতো তাঁকে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মলকুমার হাঁসদা বললেন, কবিতা স্কুলে চুপচাপই থাকত। কারও সঙ্গে সেরকম মিশত না। ফলে, ও যে এরকম রেজাল্ট করবেআমরা ভাবতেই পারিনি। ওর এই সাফল্যে আমরা গর্বিত।কবিতা বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৯০, ভূগোলে ৯৪, সংস্কৃতে ৯২ এবং শারীর শিক্ষায় ৯৯ পেয়ে স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *