তৃণমূল ও বিজেপির চাপে – এবার মহা সমস্যায় মতুয়া সমাজ

নিউজ ডেস্ক ::সোজাসুজি ভোটের ঢাকে কাঠি দিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বনগাঁ, ঠাকুরনগরের বিস্তীর্ণ ভোটারসমাজ পড়েছেন মহা সমস্যায়। পিংপং বলের মতো তারা একবার ছুটেছে বিজেপির ঘরে, পরেই ছুটেছে তৃণমূলের ঘরে। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান হয় নি। নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগের জন্যই মহা ফাঁপড়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সমাজ। এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলি আদতে হিন্দু। তারা বাংলাদেশে ধর্মীয় হিংসার শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন। তারপর বানিয়েছেন রেশন কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড। কিন্তু SIR হওয়ার ফলে ভোটার তালিকায় নাম থেকেও এখন লাভ নেই। নতুন করে সব প্রমাণ দিতে হবে। নইলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে সিএএ-এর মাধ্যমে। তাহলেই ভোট দেওয়া যাবে। আর অধিকাংশ মতুয়ার কাছেই নির্বাচন কমিশনের চাওয়া ডকুমেন্টস নেই। ফলে তাঁরা পড়েছেন মহা বিপদে।

তৈরী হয়েছে ভয়ের আবহাওয়া। আর এমন সময় ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি। একদল বলছে এসআইআর-এর মাধ্যমে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। পাঠানো হবে ডিটেনশন ক্যাম্পে। অন্য দল আবার সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিক বানানোর কথা বলছে। তারপর ভোটাধিকার মিলবে বলে দেওয়া হচ্ছে আশ্বাস। এসআইআর প্রক্রিয়ার প্রথম থেকেই বিরোধীতা করছে তৃণমূল। এই প্রক্রিয়ার ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা সকল হিন্দু উদ্বাস্তুদের সমস্যা হবে বলেও জানান হয়েছে। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে বলেও দাবি করেছেন তারা।

এমন পরিস্থিতিতে মতুয়া সমাজের মন পেতে ঠাকুরনগরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি সভা করেন। সেই সভায় মতুয়া সমাজের পাশে থাকার বার্তা দেন। পাশাপাশি সিএএ-তে অ্যাপ্লাই করতে বারণ করেন।
তাঁর যুক্তি, সিএএ-তে অ্যাপ্লাই করার অর্থ হল আপনি দেশের নাগরিকই নন। আর এই কারণে দেশে থাকার অধিকার চলে যেতে পারে। তাই তিনি এবং তাঁর দল এর বিরোধীতা করেন। এভাবেই তিনি নিজের দিকে আনতে চাইছেন মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক। অন্যদিকে মাথায় রাখতে হবে, এসআইআর চালু হওয়ার পর মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপিও। তাদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে সিএএ ক্যাম্প (সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট)। এর মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের প্রথমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তারপর তাদের ভোটার তালিকায় নাম তুলে দেওয়া হবে বলে জানান হয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই দিশাহীন মতুয়া সমাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *