আলোর শহর চন্দননগরে করোনা ও লক ডাউনের ফলে নেবে এসেছে শুধুই অন্ধকার

0 0
Read Time:4 Minute, 3 Second

সুমন করাতি, হুগলি: যে শহর ছিল আলোয় উজ্জ্বল সেই শহর আজ অন্ধকারে হাহাকার করছে।সংসার বাঁচাতে ঘরের বউ নেমে এসেছে রাস্তায়। চারচাকা গাড়ি চেপে ঘুরতে সে আজ মাছ বিক্রি করছে।একটা এলাকা সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে যা দেখলে ভাবাই যাবে না।কি ভয়ঙ্কর সর্বনাশ ডেকে নিয়ে এসেছে করোনাভাইরাস ও লকডাউনে।চন্দননগর বিখ্যাত ছিল তারা আলোক শিল্পের জন্য। আর এই শিল্পকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষের রুটি রোজগার ছিল।কুলু পুকুর ধার থেকে বিদ্যা লঙ্কা এলাকাটি দু’পাশে সারিবদ্ধ দোকান ছিল শুধুই আলো। যেখানে গেলে আপনি দেখতে পেতেন একের পর এক দোকান আলো ঝলমল করছে।চলছে নানা রকম কারুকার্যের কারখানা।আলোক শিল্প শুধু এই রাজ্য নয় বিহার আসাম ঝারখান্ড উড়িষ্যা দেশের সর্ব প্রান্ত থেকে মানুষ আসতো এখানকার তৈরি আলোক সরঞ্জাম কিনে নিয়ে যেতে।যেগুলি দিয়ে তারা সেখানে তাদের ব্যবসা চালাত।একটা আলোক শিল্পকে ঘিরে শুধু চন্দননগর এলাকা নয় হুগলি জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত হতো।সেই আলোকশিল্পী আজ অন্ধকারে কাঁদছে।একাধিক দোকান বন্ধ হয়ে গেছে।আর কিছু দোকান আলোর সরঞ্জাম গুটিয়ে সবজি,মনোহারী ও মুদিখানার দোকানে পরিবর্তন হয়েছে।আবার কেউ পুঁজির অভাবে দোকান বন্ধ করে দিয়ে দোকানের সামনে বসেই মাছ কি মুরগির মাংস বিক্রি করতে শুরু করে দিয়েছে।এক চরম অন্ধকার নেমে এসেছে আলোর শহর চন্দননগরে।যে দোকানটি ছিল আলোর জন্য বিখ্যাত আজ সেই দোকানটি মনোহারী দোকানে রূপান্তরিত হয়েছে।দোকানদার ঘরের বউ এসে দোকানদারি শুরু করেছে। কেন এই অবস্থা হলো প্রশ্ন করতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে।বললেন শুধু নিজের সংসার নয় আরো দশ পনেরো টি সংসার চলত তাদেরই এই আলোর ব্যবসাতে।কিন্তু লকডাউন এর জন্য এবং চীন থেকে মাল আসা বন্ধ হওয়াতেই দোকান বন্ধ করে দিতে হয়েছে তাই।তিনি ধারদেনা করে সেই দোকানে মনোহারী তুলে নিজেই দোকানদার সেজে দাঁড়িয়েছেন সংসার বাঁচাতে। একাধিক দোকান যেমন বন্ধ হয়েছে তেমনই কয়েকটি দোকানের সামনে একদিন যাদেরকে আলোকশিল্পী বলেই জানা যেত তারা আজ কেউ মাছ বিক্রি করছে আবার কেউ সবজি বিক্রি করতে বসে পড়েছে। প্রত্যেকের মুখেই একটি কথাই শোনা গেছে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি।এখন সংসার বাঁচাতে মরিয়া হয়ে এই ব্যবসাতেই নামতে হয়েছে।লকডাউন চীন থেকে মাল আসা বন্ধ,ট্রেন বন্ধের জন্য বাইরের লোক আসা বন্ধ।তেমনি সমস্ত পুজোর অর্ডার ক্যানসেল হয়ে গেছে।তাই এখন আমাদের বাঁচার জন্য এই পথ বেছে নিতে হয়েছে।এছাড়া আর কোন রাস্তা নেই আমাদের।চন্দননগর কে এখন আর আলোর শিল্প বলা যাবেনা,বলতে হবে অন্ধকারে হারিয়ে গেছে আলোর শহর চন্দননগর।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!