এসএসসি আইনে ‘বদল’ হাইকোর্টের
নিউজ ডেস্ক::স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির মধ্যেই বড় খবর!
আইনের একটি জায়গাতে রদবদল করল কলকাতা হাইকোর্ট। শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। আর এর মধ্যেই একটি নিয়মে বদল করল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার থেকে পাঁচ বছরের কম চাকরির মেয়াদেও বদলি কার্যকর হবে।
বর্ধমানের এক আবেদনকারীর আবেদনের ভিত্তিতে আজ একটি শুনানি হয় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা’র এজলাসে। সেই মামলার শুনানিতেই এহেন নির্দেশ হাইকোর্টের।
বলে রাখা প্রয়োজন, ৫ বছরের কম চাকরির মেয়াদ কালে বদলি করা যেত না দীর্ঘদিন। শারীরিক অসুস্থতার জন্যেও এহেন বদলি আটকে যেত। আর সেই নিয়মেই বদল ঘটালেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। শারীরিক অসুস্থতা থাকলে, ৫ বছরের কম চাকরির মেয়াদকাল হলেও বদলি কার্যকর হবে। এমনটাই নির্দেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা’র।
শুধু তাই নয়, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে বদলির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ। বলে রাখা প্রয়োজন বর্ধমান আউশগ্রামের হাতকিরিনগর বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন হামিদা খাতুন। ২০১৯ সালে চাকরিতে যোগ দেন। স্ত্রী রোগ সংক্রান্ত বিশেষ সমস্যা রিয়েছে তাঁর। স্কুলে যেতে যাতায়াত মিলিয়ে ৪০০ কিলোমিটার পারি দিতে হয় হয় শিক্ষিকাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে বাড়ি হামিদা খাতুনের৷ চিকিৎসকেরা জানান শারীরিক কারণে ৪০০ কিলোমিটার যাতায়াত করে স্কুলে যাওয়া সঠিক নয়। এমনটাই পরামর্শ দেন তাঁকে চিকিৎসকরা। আর এরপরেই গত ২৪ অগাস্ট ২০২১ বদলির জন্য আবেদন করলে তা বাতিল করে দেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এসএসসি বদলি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন হামিদা খাতুন, সুদেষ্ণা বেরা মাফুজা খাতুন সহ অনেকেই। সেই মামলায় সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মন্তব্য, “অসুস্থতা কী ডাকবিভাগে বলে আসে! যে কোনও সময় মানুষ অসুস্থ হতে পারেন।” কিন্তু এসএসসি আইন ১৯৯৭ সালের ১০ বি ধারায় ৫ বছরের কম চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে বদলির সুযোগ ছিল না। ২০১৭ সালে হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মামলার পরেও ওই নিয়ম অপরিবর্তিত থাকে।
এসএসসি বদলি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য ছিল, “গোলি মারো রুলো কো।” স্নিগ্ধা দত্তের মামলায় ওই মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ৫ বছরের কম চাকরির অভিজ্ঞতায় বদলি নিয়ে কার্যত একই চিন্তাভাবনা দেখলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আর এহেন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। এমনকি আইনজীবীদের একাংশের মতে, এহেন পদক্ষেপ কার্যত নজিরবিহীন। শুধু তাই নয়, হাইকোর্টের এহেন উদ্যোগে বহু মানুষ উপকৃত হবে বলেও মনে করছে আইনজীবীদের একাংশ।