মহিলা টি ২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হার ভারতের
নিউজ ডেস্কঃ কমনওয়েলথ গেমস ফাইনালেরই পুনরাবৃত্তি মহিলাদের টি ২০ বিশ্বকাপে। যা হেলায় জেতার কথা সেই ম্যাচেই পরাস্ত হলো ভারত। খারাপ ফিল্ডিং, ডেথ ওভারে জঘন্য বোলিং যার অন্যতম কারণ। হাতে থাকা ম্যাচ বের করতে ব্যর্থ সিংহভাগ ব্যাটারই। যার নিট ফল, ভারতের বিদায়। টানা তৃতীয়বার টি ২০ বিশ্বকাপ জয়ের দিকে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
এদিন কেপ টাউনে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রানে পৌঁছয়ে মেগ ল্যানিংয়ের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া। ভারতের ফিল্ডিং আশানুরূপ হয়নি। বেথ মুনির ক্যাচ ফেলেন শেফালি ভার্মা। সাতটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে মুনি ৩৭ বলে ৫৪ রান করেনষ ল্যানিং অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৪৯ রানে। ১৮ বলে ৩১ রান করেন অ্যাশলেঘ গার্ডনার। পাওয়ারপ্লে-র প্রথম ৬ ওভারে অজিদের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৪৩। ১০ ওভারের শেষে তা হয় ১ উইকেটে ৬৯। ১৫.১ ওভারে ১০০ রান পূর্ণ হয়। সেখান থেকে ১৭২ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ওভারে ১৮ রান খরচ করেন রেণুকা সিং। শিখা পাণ্ডে ৩২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেন। দীপ্তি শর্মা ও রাধা যাদব পান একটি করে উইকেট। রেণুকা চার ওভারে ৪১ ও অসুস্থ হয়ে ছিটকে যাওয়া পূজা বস্ত্রকারের পরিবর্ত স্নেহ রানা ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচ করে কোনও উইকেট পাননি। শেষ ৫ ওভারে ৬১ রান খরচ করাই ফারাক গড়ে দিল।
১৭৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। ৩.৪ ওভারে ২৮ রানের মধ্যেই পড়ে যায় তিন উইকেট। শেফালি ভার্মা ৯, স্মৃতি মান্ধানা ২ ও যস্তিকা ভাটিয়া ৪ রান করে সাজঘরে ফেলেন। যদিও এই বিপর্যয় ভারত সামাল দেয় হরমনপ্রীত কৌর ও জেমাইমা রডরিগেজের ব্যাটে ভর করে। প্রথম ৬ ওভারে স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৫৯। ১০ ওভারের শেষে তা বেড়ে হয় ৩ উইকেটে ৯৩। যেভাবে তাঁরা খেলছিলেন তাতে ভারতের জয়ের সম্ভাবনা ক্রমেই উজ্জ্বল হচ্ছিল। যদিও ১০.২ ওভারে ডার্সি ব্রাউনের বাউন্সার উইকেটকিপারের মাথার উপর দিয়ে পাঠানোর চেষ্টা করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন জেমাইমা। ২৪ বলে ৪৩ রান করে তিনি আউট হলে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৯৭।
এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন হরমনপ্রীত ও রিচা। গতকাল অসুস্থ হয়ে পড়া হরমনপ্রীতের খেলা নিয়ে ছিল সংশয়। এদিন দুরন্ত অর্ধশতরান উপহার দিলেন তিনি। ৬টি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ৩৪ বলে ৫২ রান করে তিনি রান আউট হন। এটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। ১৪.৪ ওভারে হরমনপ্রীত আউট হলে ভারতের স্কোর হয় ৫ উইকেটে ১৩৩। নিজের আউটে হতাশা ব্যক্ত করেন কৌর। ষোড়শ ওভারের শেষ বলে ফর্মে থাকা রিচা ঘোষ আউট হয়ে যান। ১৭ বলে ১৪ রান করে তিনিও ব্রাউনের শিকার।
১৬ ওভারে ১৩৫ রানে ভারতের ষষ্ঠ উইকেটটি পড়েছিল। রান আউট হয়ে ফেরার সময় দীপ্তিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন হরমনপ্রীত, মাথায় হাত বুলিয়েও দেন। দীপ্তি ও স্নেহ ভারতকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও চালাতে থাকেন। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ২০ রান। ১৯তম ওভারের শেষ বলে স্নেহকে আউট করে দেন জেস জোনাসেন। ফলে শেষ ওভারে জিততে ভারতের প্রয়োজন হয়ে পড়ে ১৬ রান। শেষ ওভারে রাধা যাদবও আউট হয়ে যান। ভারতকে ৫ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট আদায় করে নিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ব্যাট হাতে ঝোড়ো ৩১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা গার্ডনার।