ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় কী প্রকারের ঝড় ?
নিউজ ডেস্ক::বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোখার পর আরব সাগরে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। তা ক্রমেই শক্তি বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপান্তরিত হতে চলেছে বলে আইএমডি সূত্রে জানানো হয়েছে। আরব সাগরের বুকে বিধ্বংসী হয়ে উঠছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। তা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে মনে করছেন আবহবিদরা।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মতো বঙ্গোপসাগরে অনুকূল পরিবেশ পেয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মোখা। আবহবিদরা মনে করছেন ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস প্রকৃতির। সাগরের বুকে তাণ্ডব চালিয়ে তা উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করছে। কেরলের সন্নিকটে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় মুম্বই উপকূলে তাণ্ডব চালাচ্ছে। কচ্ছ ও গুজরাত উপকূলেও তাণ্ডবের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি।
এখন প্রশ্ন এই সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় কোন প্রকৃতির বা কোন প্রকারের। তার আগে জানা দরকার সাইক্লোন কত প্রকারের হয়। এবং তার প্রকারভেদ কী করে হয়। নাতিশীতোঞ্চ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় ও ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে গঠনগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় অর্থাৎ নিরক্ষরেখার ৫ ডিগ্রি থেকে ২০ ডিগ্রি উত্তর ও দক্ষিণে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বেশি হয়।
ঘূর্ণিঝড় যখন স্থলভাগে প্রবেশ করে, তথন সবার প্রথম বহিঃসীমা অঞ্চলে প্রভাব পড়ে। সেখানে সাগর যদি খুব উষ্ণ হয়, তবে ঘূর্ণিঝড়কে আরও ভয়ঙ্কর করে তোলে। বিশ্বের অন্যান্য উপকূলের থেকে বঙ্গোপসাগরে জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি সবথেকে বেশি হয়। তবে আরব সাগরও যে পিছিয়ে নেই, তার প্রমাণ ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়।
গতিবেগ অনুসারে ঘূর্ণিঝড় পাঁচ প্রকারের হয়। যে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার ঊর্ধ্বে হয় তাকে ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ হয় ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত। ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার যদি ঝড়ের গতিবেগ থাকে, তবে তাকে বলা হয় সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
ঝড়ের গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হলে তাকে বলা হয় ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর ঘূর্ণিঝড়ের গতি যদি ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়, তবে তাকে বলে এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা অত্যধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
তারপরও যদি গতি বাড়ায় ঝড় অর্থাৎ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে ঝড় বইতে থাকে, তখন সেই ঝড়কে সুপার সাইক্লোন বলা হয়। আইএমডির বর্তমান পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা অত্যধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড়। কেননা তার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার হবে বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল। এখন তা শক্তি বাড়িয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে পারে বলে অনুমান।