তৃণমূলে টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে ফেরার হিড়িক
নিউজ ডেস্ক::দলের টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করলেন জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ফারহাত বানু। কংগ্রেসে যোগ দিলেন তাঁর স্বামী তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য জাভেদ আকতারও। বুধবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে পাশাপাশি বর্ধমানের পানাগড় ও মুর্শিদাবাদের কান্দিতেও কংগ্রেসমুখী তৃণমূল নেতারা।
এদিন ইসলামপুরে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ফারহাত বানু ও তাঁর স্বামী জাভেদ আকতারের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর। দল ছাড়ার আগে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন জাভেদ আকতার।
দলত্যাগের পর তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বিরুদ্ধে এক ঝাঁক অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ টাকার বিনিময়ে টিকিট দেওয়া হচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলায়। তিনি টাকা দেননি, তাই তাঁকে টিকিট না দিয়ে অন্য কাউকে টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
তৃণমূলে অপমানিত হয়ে তাঁরা আর দল করতে চাননি। তাই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ফারহাত বানু ও জাভেদ আকতার। এমন চিত্র শুধু ইসলামপুরেই নয়, এদিন ঘটেছে বর্ধমানের পানাগড়েও। তৃণমূলে টিকিট না পেয়ে দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন ধর্মেন্দ্র শর্মা।
এদিনই জাতীয় কংগ্রেসের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন পানাগড় বাজারের বাসিন্দা ধর্মেন্দ্র শর্মা। কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭৩ নম্বর বুথে জাতীয় কংগ্রেসের হয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ধর্মেন্দ্র শর্মা জানিয়েছেন, ২০০৩ সাল থেকে তিনি সক্রিয় ভাবে তৃণমূল করতেন। কিন্তু দল থেকে তাঁকে কোনোরকম সম্মান দেয়নি।
২০১৩ ও ২০১৮ সালেও তাঁকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হয়নি। এ বছরও তাঁকে ব্রাত্য রাখা হয়। তাঁর পরিবর্ত এমন ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হয়েছে যিনি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের হয়ে কাজ করেছেন। এমনকী নির্বাচনের দিন সিপিআইএমের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন ধর্মেন্দ্র।
বুধবার জাতীয় কংগ্রেসের হয়ে কাঁকসার বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব অবশ্য মাথা ঘামাতে চান না এ বিষয়ে। তাদের সাফ কথা, যাঁরা তৃণমূল করেন তাঁরা দলের নির্দেশ মানবেন, দল ছেড়ে চলে যাবেন না। যে ব্যক্তি তৃণমূলের কর্মী হিসেবে দাবি করছেন, তিনি গত দুটি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন।
এদিকে তৃণমুলে টিকিট না পেয়ে কান্দিতে তৃণমুল নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ উগরে দেন দলের বিরদ্ধে। বুধবার যাঁদের মনোনয়ন পেশ করার কথা ছিল সকালে হঠাৎ জানতে পারেন, তাদের নাম বাদ। তার পরিবর্তে সিপিএম এবং কংগ্রেসের লোককে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করেছেন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার।
কান্দি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক হাবিবুর রহমান জানান, কান্দি তৃণমূলের ব্লক সভাপ্রতি বাগবুল হোসেনের অনুগামী হওয়ার কারণে প্রার্থীপদ থেকে তাঁদের নাম রাতারাতি বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন এঁরা কোন পথ অবলম্বন করেন, সেটাই দেখার।