মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুশ্চিন্তা’ নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

0 0
Read Time:7 Minute, 14 Second

নিউজ ডেস্ক ::দিল্লি গেলেন মেদিনীপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি কলকাতা বিমানবন্দরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্ত্রিত্ব যাওয়া প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন। লালগোলায় সরস্বতী পুজোর বিসর্জনে বোমাবাজি নিয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু-তিনজন ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করতে পারেন না। উনি ভাবছেন, যদি বেল পেয়ে যান, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এসে আবার মন্ত্রী হবেন। আবার কাকে করবেন সে কী করবে, সে থাকবে না চলে যাবে, এই চিন্তা দুশ্চিন্তায় তিনি কাউকে দায়িত্ব দেননি। কেষ্ট জেলে থাকলো পদে থাকেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলে থাকলে মন্ত্রী থাকেন, এটা তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ করার ধরণ বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।

জাতীয় এসসি কমিশনের রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চাওয়ার প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেখানে পৌঁছেছে এবং টিএমসির লোকজন যেভাবে অত্যাচার করছে এর থেকে বাঁচার কোনও রাস্তা নেই। যে সরকার মানুষকে সুশাসন দেবে, তারা যদি লুটপাট-খুনখারাপি করে তাহলে তা মানুষের যাওয়ার রাস্তা থাকে না। প্রত্যেকে এখান থেকে মুক্তির রাস্তা খুঁজছেন। কেউ রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছেন, কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছেন, কেউ কোর্টে যাচ্ছেন, দেখা যাক কোন রাস্তাটা ঠিক থাকে।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে একাধিক মানুষের আধার কার্ড বাতিল প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, অনেক জায়গায় চিঠি এসেছে। বিজেপি জানে, পশ্চিমবঙ্গে বহু এই ধরনের কার্ড আছে যেটা ভুয়ো। রেশন কার্ড, আধার কার্ড, জব কার্ড লক্ষ লক্ষ ভুয়ো। একটা দুটো নয়, ৬২ লক্ষ রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। সাড়ে ১৪ লক্ষ জব কার্ড আছে যেটা ভুয়ো, আধার কার্ড ভুয়ো। যাঁদের কাছে নথি নেই, তাঁদের চিঠি দেওয়া হয়েছে, বাতিলও করছে। এ ব্যাপারে অথরিটি সঙ্গে যোগাযোগ করুন, যাঁরা সমস্যায় পড়ছেন।

আধার কার্ড বাতিল বিজেপির চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেছে শাসক দল। এব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেন, শাসক দল যদি বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে আসে, অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে এসে জোর করে আধার কার্ড বানিয়ে দেয়, নথি ছাড়া ভোটার লিস্টে নাম তুলে দেয়, তারা তো ভোটার হতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব আছে বিদেশি নাগরিকদের আলাদা করা এবং দেশে ফেরত পাঠানো।
সন্দেশখালি ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কি কোনও কথা হবে, সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, এ বিষয়ে দলের যারা অথরিটি আছে, তারা কথা বলছে। যদি তিনি ডাকেন-শোনেন, তাহলে তিনিও থাকব, ন্যাশনাল কাউন্সিলের মিটিং এর জন্য যাচ্ছি।

নদিয়ার তেহট্টে তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, গুলি গোলা চলা, গুলি লাগা, মারা যাওয়া এটা নতুন কিছু নয় পশ্চিমবঙ্গে। রোজ কোথাও না কোথাও গুলি চলছে, হতাহত হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন দুষ্কৃতকারীদের চেনা সত্ত্বেও ধরে না, আটকাও না, কেন না তারা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তারা কোনও চিঠি দেবেন কিনা সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, জানি না সেটা ওখানে গেলে কথা হবে। তবে এখানকার যাঁরা পার্টি নেতৃত্ব রয়েছেন, প্রতিনিয়ত রিপোর্ট পাঠানো হয় এবং ওখান থেকে রিপোর্ট চাওয়াও হয়। তিনি বলেন, নাড্ডাজি দল পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ঘুরে গিয়েছেন, পরিস্থিতি দেখেছেন, লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। বিভিন্ন এসি ও এসটি সমাজের তরফ থেকে চিঠি লিখছেন রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীকে। লুকানোর কিছু নেই, সবাই দেখাচ্ছেন, সরকার বা অন্য এজেন্সি কী করে সেটা দেখার।

শিবু হাজরার গ্রেফতারি না হওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, শিবু হাজরা বলুন বা শেখ শাহজাহান প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সবাই জানে কে কোথায় রয়েছে। মিডিয়াকে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন কিন্তু পুলিশ খুঁজে পাচ্ছেন না। কারণ পুলিশ ওদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছে, পুলিশই ওদের তৈরি করেছে। টিএমসির এইসব নেতারা পার্টির জন্য চাঁদা তুলে দেন, ভোট করিয়ে দেন, তাদের গায়ে কেউ হাত দেবে না।

লালগোলায় সরস্বতী পুজোর বিসর্জনে বোমাবাজির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ছে। বিশেষ করে হিন্দু সমাজের কোন বড় তিথি-পড়ব-মেলা হলে সেখানে নিরাপত্তার প্রশ্ন আসে, ভয় ভয় করেন। কেন এটা কি পাকিস্তান বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। মুখ্যমন্ত্রী ঈদে দু’দিন ছুটি দেবেন, রামনবমী বা রাম মন্দির জন্য ছুটি দেবেন না। সেদিনে তার বিরুদ্ধে মিছিল করবেন, এটা কাকে উৎসাহ দিতে চাইছেন, তো এই ঘটনা তো হবেই।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!