এবার গ্রাম্য সালিশি সভায় মারধরের জেরে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ
নিউজ ডেস্ক ::বাংলা কি ধীরে ধীরে মধ্যযুগীয় তালিবানি শাসনের যুগে চলে যাচ্ছে? এখানে কি আধুনিক শাসন বলতে কিছু নেই? নাহলে বার বার একই ঘটনা ঘটে কি করে? চোপড়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোচবিহারের বকরাভিটায় । এবার গ্রাম্য সালিশি সভায় মারধরের জেরে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ। এমনই দাবি বধূর স্বামীর। ঘটনা শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ির বকরাভিটা এলাকায়। ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্রের খবর আত্মঘাতী গৃহবধূর সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই নিয়েই গন্ডগোলের সূত্রপার। আত্মাঘাতী মহিলার স্বামী জানান, তার স্ত্রী ৮ দিন নিরুদ্দেশ থাকার পরে আবার তার কাছে ফিরে আসে। তিনি তাকে গ্রহণ করেন। কিন্তু তাতে বাদ সাধেন স্থানীয় কয়েকজন মহিলা। তাদের দাবি সালিশ না বসিয়ে আমি বউকে ঘরে তুলতে পারব না। তুললে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হবে। গত শুক্রবার বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সালিশি সভায় যাই সেখানে বিচারের নামে আমার স্ত্রীকে মারধর করেন কয়েকজন। তাঁকে প্রকাশ্যে অপমান করা হয়। এর পর বাড়ি ফিরে আমার স্ত্রী কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন। স্বাভাবিক কারণেই এই মধ্যযুগীয় শালিসি সভা নিয়ে ক্ষুব্ধ নাগরিক মহল।
গ্রমের পঞ্চায়েতগুলো এখন ‘আইন’, ‘বিচার’ সমস্ত বিভাগের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে। মহিলার স্বামীর অভিযোগ, ” আমারে ওরা বলেছিল, তুই বউকে নিয়ে আয়। আমরা একটু হালকাভাবে সাবধান করে দেবো। তারপর আমি আমার শ্বশুর বাড়ির থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসি। আমাকে ওরা বলছিল, ওকে যদি ঘরে তুলিস, তাহলে তোকে শেষ করে দেব। ওকে তো যাচ্ছেতাইভাবে মেরেছেই, আমাকে মেরেছে। জুতো দিয়ে মেরেছে আমাকে।” পঞ্চায়েতের এক সদস্য বলেন, “দুই পরিবারের তরফ থেকেই মিসিং ডায়েরি করা হয়েছিল। ওরাই চলে আসে। তারপর পঞ্চায়েতের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, গ্রামে শালিশি ডেকে মিটমাট করে নিতে।” সেই শালিসি সভাতেই চরম নিগ্রহ করা হয় ওই দু’জনকেই। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মাহত্যা করেন ওই মহিলা।