সায়ন্তিকা-রেয়াতকে বিধানসভায় শপথ বাক্য পাঠ করালেন স্পিকার
নিউজ ডেস্ক ::অবশেষে শপথ নিলেন সায়ন্তিকা ব্যানার্জি এবং রেয়াত হোসেন। তবে রাজ্যপালের কাছে নয়। তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে রাজ্যপালকে জানিয়েই স্পিকার এই শপথ বাক্য পাঠ করান।
সংবিধানের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী জয়ী প্রত্যেককে শপথ নিতে হয়। এটাই রীতি যে স্পিকারের সামনে বিধানসভায় শপথ নেন বিধায়করা। কিন্তু এই দুজনের ক্ষেত্রে দেখা গেল রাজভবনে বারবার জানানোর পরও রাজভবন কোনও পদক্ষেপ করলেন না। সেকারণে শপথ রীতি অনুযায়ী বিধানসভায় হওয়ার কথা। এই দুজনও সেটাই জানান রাজ্যপালকে। তাতেও রাজ্যপাল রাজি না হওয়ায় সাংবিধানিক রীতি মেনেই শেষ পর্যন্ত স্পিকারই তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
বরানগর এবং ভগবানগোলা বিধানসভার উপনির্বাচনে জয় হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রার্থীর। বরানগরের বিধায়ক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভগবানগোলার বিধায়ক পদে নির্বাচিত হয়েছেন রেয়াত হোসেন।
কিন্তু তাঁদের বিধায়ক পদে শপথ গ্রহন নিয়ে চরম জটিলতা তৈরি হয়েছিল। কিছুতেই রাজ্যপাল সংবিধান মেনে বিধানসভায় গিয়ে তাঁদের শপথ গ্রহণ করাতে রাজি হননি। এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রকাশ্যেই রাজ্যপালকে নিশানা করে বলেছিলেন, রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছে মেয়েরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সায়ন্তিকাও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন রাজ্যপালের কাছে শপথ গ্রহন করানোর জন্য অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তার উত্তরে তাঁকে আলাদা করে ইমেল করে জানানো হয় যেন তিনি রাজভবনে এসে শপছ নেন। রেয়াত হোসেনকে অনেক দেরিতে সেই ইমেল করা হয়। কেন তাঁকে আগে জানানো হল তাতে তো সন্দেহ থাকছেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলাকর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন পুলিশের কাছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন থানায। কিন্তু সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে রাজ্যপাল পদে থাকা কারোর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা যায় না। এমকী দেশের কোনও আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও করা যায় না।
এই নিয়ে রাজ্য রাজ্যপাল বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন তাঁকে কালিমালিপ্ত করে কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মানহানির মামলাও করেছেন রাজ্যপাল। এদিকে দুই বিধায়ককে শপথ গ্রহণ করাতে বিধানসভায় হাজির হননি তিনি। শেষে স্পিকার রুল জারি করে দুই বিধায়কের শপথ বাক্য পাঠ করান। বিতর্ক জিইয়ে রেখেই বিধানসভায় দুই বিধায়কের শপথ গ্রহন হল। তবে রাজ্যপালকে এই শপথের কথা জানানো হয়েছে।